পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে একটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কোকরু শহরের ফাম্বিতা এলাকায় এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটে।
শুক্রবারের এই হামলায় আরও ১৩ জন আহত হয়েছেন। নাইজারের সরকার নিহতদের স্মরণে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় মুসল্লিরা পবিত্র রমজান মাসের একটি নামাজে অংশ নিচ্ছিলেন। ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা মসজিদটি ঘিরে ফেলে এবং নির্বিচারে গুলি চালায়।
হামলায় স্থানীয় বাজার এবং বাড়িঘরেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নাইজারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেট সাহারা (ইআইজিএস) নামক জঙ্গিগোষ্ঠীকে দায়ী করেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সম্প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর সঙ্গে সম্পর্কিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে তাদের প্রভাব বিস্তার করছে।
২০১২ সালের বিদ্রোহের পর তারা মালির উত্তরাঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করে। এরপর নাইজার এবং বুরকিনা ফাসোতেও তাদের কার্যক্রম বিস্তৃত হয়।
সম্প্রতি টোগো এবং ঘানার মতো উপকূলীয় দেশগুলোতেও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, এর ফলস্বরূপ মালিতে দুটি, বুরকিনা ফাসোতে দুটি এবং নাইজারে একটি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও দেশগুলো এখনো সামরিক শাসনের অধীনে রয়েছে। অভ্যুত্থানের পর দেশগুলো পশ্চিমা মিত্রদের থেকে দূরে সরে এসে রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সহায়তা চাইছে।
সাহেল অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ইতিমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছে, কিন্তু সহিংসতার মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে।
নাইজারের সরকার হামলাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা