বসন্তের আগমন: দিন-রাতের হিসাব আর উৎসবের মেলা। পৃথিবীতে ঋতু পরিবর্তনের এক গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো বসন্তের আগমন।
এই সময়ে দিন ও রাতের আলো প্রায় সমান হয়ে আসে, যা প্রকৃতির এক বিশেষ মুহূর্ত। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘বিষুব’।
প্রতি বছর, ২১শে মার্চের কাছাকাছি সময়ে এই ঘটনা ঘটে। ২০২৫ সালে, ২১শে মার্চ, বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটা ১ মিনিটে এই বিষুব শুরু হবে।
এই সময়ে, পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে, অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশে, বসন্তের আগমন ঘটে। প্রকৃতি নতুন রূপে সেজে ওঠে, গাছের পাতাগুলো সবুজ হয়ে যায়, ফুলেরা তাদের সুবাস ছড়াতে শুরু করে।
শীতের বিদায় এবং গরমের আগমনের এই সন্ধিক্ষণে আবহাওয়ার পরিবর্তন আমাদের জীবনযাত্রায়ও প্রভাব ফেলে।
কিন্তু কেন এমনটা হয়? এর কারণ হলো, সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর আবর্তনের সময় তার অক্ষের সামান্য হেলানো অবস্থা।
এই কারণে, বছরের বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর একেকটি অংশ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে, ফলে ঋতু পরিবর্তন হয়। বিষুবের সময়, পৃথিবীর কোনো অংশই সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে না, তাই দিন ও রাতের আলো প্রায় সমান হয়।
বসন্তের এই সময়ে, বিভিন্ন দেশে এই দিনটি নানাভাবে উদযাপন করা হয়। মেক্সিকোর চিচেন ইৎজা-তে মায়ান পিরামিডের স্থাপত্যে সূর্যের আলো এক বিশেষ নকশা তৈরি করে।
ইংল্যান্ডের স্টোনhenge-এর মতো প্রাচীন স্থানেও মানুষজন এই সময়ে একত্রিত হয়। জাপানে এই দিনটি সরকারি ছুটি হিসেবে পালিত হয়, যেখানে পরিবারের সদস্যরা তাদের পূর্বপুরুষদের কবর জিয়ারত করেন।
ইরানের মানুষ এই সময়ে তাদের ঐতিহ্যবাহী নওরোজ উৎসব পালন করে, যা নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। চীনেও এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের উৎসবের আয়োজন করা হয়।
আমাদের দেশেও, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের উৎসব ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পয়লা ফাল্গুন, বসন্তের প্রথম দিন হিসেবে পালন করা হয়, যা আমাদের সংস্কৃতিতে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
এই সময়ে, প্রকৃতির এই পরিবর্তন আমাদের মনে নতুন আশা ও উদ্দীপনা জাগায়। সুতরাং, বসন্তের আগমনের এই সময়টি শুধু প্রকৃতির নয়, বরং আমাদের জীবনেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এই সময়ে, প্রকৃতির পরিবর্তনকে অনুভব করা এবং উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠা আমাদের জন্য খুবই স্বাভাবিক।
তথ্য সূত্র: CNN