ফ্রান্সের ভনাসে অবস্থিত জর্জেস ব্ল্যাঙ্ক (Georges Blanc) নামের একটি বিখ্যাত ফরাসি রেস্টুরেন্ট, যারা দীর্ঘদিন ধরে মিশেলিন স্টার ধরে রেখেছিল, এবার সেই খ্যাতি হারাতে বসেছে। খবরটি এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে।
কয়েক দশক ধরে এই রেস্টুরেন্টটি বিশ্বজুড়ে খাদ্যরসিকদের কাছে সুপরিচিত ছিল।
মিশেলিন গাইড (Michelin Guide) সাধারণত রেস্টুরেন্টগুলোকে তাদের রান্নার গুণমান এবং পরিবেশনার ভিত্তিতে তারকা প্রদান করে। এই তারকা প্রাপ্তি রেস্টুরেন্টগুলোর জন্য বিশাল সম্মানের, যা তাদের খ্যাতি আরও বাড়িয়ে তোলে।
জর্জেস ব্ল্যাঙ্ক ১৯২৯ সাল থেকে অন্তত একটি মিশেলিন স্টার ধরে রেখেছিল। ১৯৮১ সাল থেকে তারা একটানা তিনটি স্টার পেয়ে আসছিল, যা তাদের রান্নার অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ।
তবে সম্প্রতি তারা একটি স্টার হারিয়েছে, বর্তমানে তাদের দুটি স্টার রয়েছে।
মিশেলিন গাইড কর্তৃপক্ষ তাদের মূল্যায়নের কিছু মানদণ্ড উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে খাবারের উপাদানের গুণগত মান, রান্নার কৌশল, স্বাদের সামঞ্জস্য, শেফের নিজস্বতা এবং নিয়মিততা।
একটি রেস্টুরেন্ট কতগুলো স্টার পাবে, তা নির্ভর করে এই মানদণ্ডগুলোর ওপর। মিশেলিন ইন্সপেক্টররা নিয়মিতভাবে, এমনকি বেনামেও, রেস্টুরেন্টগুলো পরিদর্শন করেন এবং তাদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে স্টার প্রদান করেন।
জর্জেস ব্ল্যাঙ্ক রেস্টুরেন্টটি ১৮৭২ সালে ‘লা মেরে ব্ল্যাঙ্ক’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর, ১৯২৯ সালে প্রথম মিশেলিন স্টার এবং ১৯৩১ সালে দ্বিতীয় স্টার লাভ করে।
এই রেস্টুরেন্টটি মূলত একটি পারিবারিক ব্যবসা ছিল, যেখানে কয়েক প্রজন্ম ধরে নারীরা শেফ হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮১ সাল থেকে টানা তিনটে স্টার ধরে রাখাটা ছিল তাদের জন্য এক বিশাল অর্জন।
এই খবরটি খাদ্যরসিক এবং রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মিশেলিন স্টার কোনো রেস্টুরেন্টের জন্য শুধু একটি স্বীকৃতিই নয়, বরং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে তাদের নির্ভরযোগ্যতাও বাড়ে।
জর্জেস ব্ল্যাঙ্কের এই স্টার হারানোর ঘটনা প্রমাণ করে, ভালো মানের খাবার পরিবেশন এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখা কতটা জরুরি।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ৮২ বছর বয়সী শেফ জর্জেস ব্ল্যাঙ্ক বলেন, “আমরা এটা আশা করিনি। একটি স্টার চলে যাওয়াটা দুঃখজনক, তবে আমরা দুটি স্টার নিয়েই কাজ চালাব। এটা কোনো সমস্যা নয়।”
খাবার পরিবেশন এবং রান্নার জগতে মিশেলিন গাইড একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী নাম। তাদের দেওয়া স্টারগুলো বিশ্বজুড়ে খাদ্যপ্রেমীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
আগামী ৩১শে মার্চ মিশেলিন গাইড ফ্রান্সের জন্য তাদের নতুন তালিকা প্রকাশ করবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন