সৌদি আরবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, উভয়পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজছে এবং এর প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হলো কৃষ্ণ সাগর শস্য চুক্তি পুনরায় চালু করা ও অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ করা।
এই আলোচনা এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ প্রায় দুই বছর ধরে চলছে। এর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া আলোচনাও ইতিবাচক ছিল বলে জানা গেছে। তবে, রাশিয়া এই বিষয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা করতে রাজি নয়। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আলোচনার পথ এখনো অনেক দীর্ঘ।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্টিভ উইটকফ। তিনি মনে করেন, সৌদি আরবে হওয়া এই আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, যা কৃষ্ণ সাগরে শস্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ধীরে ধীরে এটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যাবে।
বৈঠকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ডিল পুনরায় চালুর বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রাশিয়া ২০২৩ সালে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, যার কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছিল, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের সার ও খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা এবং ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে সক্রিয় রাখা না রাখা। এছাড়া, যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি, বেসামরিক নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা এবং জোর করে ইউক্রেন থেকে শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়াকে অবশ্যই তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিতে হবে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি, উভয়পক্ষই তাদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে। সম্প্রতি, রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন স্থানে সাতজন নিহত হয়েছে। এছাড়া, ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় রেলওয়ের অনলাইন সার্ভারেও সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এই আলোচনার ফলে, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকে এখন সবার দৃষ্টি। এই আলোচনার ফলস্বরূপ, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে শান্তি ফিরে আসবে কিনা, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা