মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে শুক্রবার বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। এর প্রধান কারণ ছিল মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের আশঙ্কা।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
শুক্রবার দিনশেষে, এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক ২ শতাংশের বেশি, ডাউ জোনস ১.৭৫ শতাংশ এবং প্রযুক্তি নির্ভর নাসডাক সূচক ২.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। বাণিজ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয় সূচক বা পার্সোনাল কনসাম্পশন এক্সপেন্ডিচার (PCE) প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়লেও খাদ্য ও জ্বালানি বাদে এই সূচকটি গত মাসের তুলনায় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণত, ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতি পরিমাপের জন্য এই সূচকটি ব্যবহার করে থাকে। ফেব্রুয়ারী মাসে খাদ্য ও জ্বালানি বাদে কোর পিসিই (Core PCE) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৮ শতাংশে, যা জানুয়ারিতে ছিল ২.৬ শতাংশ।
ফেডারেল রিজার্ভের ২ শতাংশের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এটি এখনো বেশি।
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে এখনো দ্বিধাগ্রস্ত, তারা মূল্যস্ফীতির হার পর্যবেক্ষণ করছে। মার্চ মাসে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভোক্তাদের আস্থা আরও কমেছে, যা ২০২২ সালের পর সর্বনিম্ন।
শেয়ার বাজারে এই দরপতনের পেছনে মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির অনিশ্চয়তাকে। বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর নীতি অর্থনীতির গতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতিকে আরও কঠিন করে তুলবে।
সমস্যা হলো, আমরা নিয়ম জানি না, এবং ব্যবসায়ীরা এতে খুবই সমস্যা অনুভব করেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি বহাল থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অটোমোবাইল আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তারও প্রভাব পড়েছে।
জেনারেল মোটরস এবং ফোর্ড-এর শেয়ারের দাম ২ শতাংশের বেশি কমেছে।
আগামী ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে পারে, এমন খবরেও উদ্বে বেড়েছে। একই সময়ে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতা করার কথা ভাবছে বলে জানা গেছে।
শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি অশনি সংকেত। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিভিন্ন খাতে প্রভাব পড়তে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে আমাদের বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান