ত্বকের রং নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে মেকআপের ব্যবহার। বিশেষ করে, বাংলাদেশে এখন বিভিন্ন ধরনের মেকআপ সামগ্রীর চাহিদা বাড়ছে, যেখানে ত্বকের ভিন্নতা অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহও বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
তবে, অনেক সময় দেখা যায়, যাদের গায়ের রং একটু গাঢ়, তাদের জন্য মেকআপ ব্যবহারের পর একটা ছাই রঙের আভা দেখা যায়, যা অনেকের কাছেই অনাকাঙ্ক্ষিত।
সম্প্রতি, এই সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের টলেডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
গবেষণা দলটির প্রধান, ফার্মাসিউটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েলা বাকি, জানিয়েছেন, তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, গাঢ় ত্বকের জন্য তৈরি মেকআপে আলট্রা মেরিন ব্লু নামক একটি উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে এই ছাই রঙের সমস্যা দূর করা সম্ভব।
সাধারণত, এই ধরনের মেকআপে ব্ল্যাক আয়রন অক্সাইড-এর পরিমাণ বেশি থাকে, যার কারণে মেকআপ ব্যবহারের পর ত্বকে এই ধূসর বা ছাই রঙের আভা দেখা যায়।
আলট্রা মেরিন ব্লু, ব্ল্যাক আয়রন অক্সাইডের থেকে ভিন্ন, যা ত্বকে লালচে এবং হলদে আভা তৈরি করে।
এর ফলে, ফাউন্ডেশন ত্বকের সাথে মিশে যায় এবং স্বাভাবিক লাগে।
গবেষণায়, গবেষকরা প্রায় ২০ ধরনের পাউডার ফাউন্ডেশন এবং ১৮ ধরনের স্টিক ফাউন্ডেশন তৈরি করেন।
এই ফাউন্ডেশনগুলো গাঢ় এবং হালকা— উভয় শেডের ছিল।
এই ফাউন্ডেশনগুলোতে আলট্রা মেরিন ব্লু ব্যবহার করা হয় এবং এর প্রভাব নিরীক্ষণের জন্য একটি স্পেকট্রোফটোমিটার ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও, ফাউন্ডেশনগুলো মানুষের ত্বকে ব্যবহার করে এর ফলাফল পরীক্ষা করা হয়।
গবেষকরা দেখেছেন, আলট্রা মেরিন ব্লু ব্যবহারের ফলে গাঢ় রঙের ফাউন্ডেশনগুলোতেও এই ছাই রঙের সমস্যা কমে আসে।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, আলট্রা মেরিন ব্লু-এর রিফ্র্যাক্টিভ ইনডেক্স, ব্ল্যাক আয়রন অক্সাইডের চেয়ে কম হওয়ায় এটি মেকআপকে কম অস্বচ্ছ করে তোলে, যা ত্বককে আরও স্বাভাবিক দেখাতে সাহায্য করে।
অধ্যাপক বাকি মনে করেন, এই গবেষণার ফলাফল মেকআপ প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের জন্য আরও বেশি উপযোগী ফাউন্ডেশন তৈরি করতে চান, তাদের জন্য এটি সহায়ক হবে।
তিনি আরও যোগ করেন, আলট্রা মেরিন ব্লু, একই শেডের আন্ডারটোনকে আরও বিস্তৃত করতে পারে এবং ত্বককে আরও স্বাভাবিক দেখাতে সাহায্য করে।
যদিও এই গবেষণা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়নি, তবে আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির (ACS) বসন্তকালীন সম্মেলনে এটি উপস্থাপন করা হবে।
এই গবেষণা, বাংলাদেশের বাজারে উপলব্ধ মেকআপ পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এর ফলে, ভবিষ্যতে আমাদের দেশের মানুষ তাদের ত্বকের জন্য আরও উপযুক্ত এবং মানানসই মেকআপ খুঁজে পাবে, যা তাদের সৌন্দর্যচর্চাকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian