অস্কার জয়ী ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা হামদান বাল্লালকে ইসরায়েলি সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। শুরুতে এই ঘটনার যথাযথ প্রতিক্রিয়া না জানানোয় সমালোচনার মুখে পড়ে তারা। অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে শিল্পীদের নিরাপত্তা দিতে তারা বদ্ধপরিকর।
জানা যায়, ‘নো আদার ল্যান্ড’ নামক তথ্যচিত্রের জন্য চলতি বছর অস্কার জেতেন হামদান বাল্লাল। ছবিটিতে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বসতি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটির পরিচালক হামদান বাল্লালকে সম্প্রতি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এবং সৈন্যদের একটি দল মারধর করে।
শুধু তাই নয়, তাকে হাতকড়া পরিয়ে, চোখ বেঁধে সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং এক রাতের জন্য আটক রাখা হয়। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হামদান বাল্লাল জানিয়েছেন, তার ওপর এই হামলা ছিল আসলে তাদের সিনেমার প্রতিশোধ।
এই ঘটনার পর অ্যাকাডেমির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বাল্লালের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রায় ৭০০ ভোটদানকারী সদস্য একটি খোলা চিঠি লেখেন। এই চিঠিতে ঘটনার নিন্দা জানানো হয় এবং অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়।
এদের মধ্যে ছিলেন মার্ক রুফালো, অলিভিয়া কোলম্যান, এমা থম্পসন, রিচার্ড গিয়ার, সুসান সারান্ডন, জোয়াকিন ফিনিক্স এবং পেনেলোপি ক্রুজের মতো খ্যাতনামা অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতারা।
আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ৭ই অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সৈন্যদের সহিংসতা বেড়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৭৭ জন শিশু।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার ১,৮৬০টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে বাকস্বাধীনতার অবদমনের বিরোধী। তারা হামদান বাল্লাল এবং অন্যান্য শিল্পীর প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এই ধরনের সহিংসতা রুখতে তারা সচেষ্ট থাকবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান