মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিচারক, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন, এবার ‘সিগন্যাল’ মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগের একটি মামলার শুনানিতে বসতে যাচ্ছেন। খবরটি নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ, যিনি ওয়াশিংটন ডিসট্রিক্ট কোর্টের প্রধান, তাকে এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আসল ঘটনা হল, ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য ‘সিগন্যাল’ ব্যবহার করেছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, এই আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং তা ফেডারেল রেকর্ড সংরক্ষণের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
মামলাটি দায়ের করেছে ‘আমেরিকান ওভারসাইট’ নামক একটি সংস্থা, যারা সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার ওপর নজর রাখে। তাদের অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তারা ‘সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে পাঠানো বার্তাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যাওয়া থেকে আটকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, যা ফেডারেল রেকর্ড আইনের পরিপন্থী।
এই মামলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও একটি বিতর্ক। বিচারক বোয়াসবার্গ এর আগে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের বিতাড়িত করার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। ট্রাম্প এই বিচারকের অপসারণের দাবি তুলেছিলেন, যা মার্কিন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ক্ষমতার বিভাজন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
আদালতে জমা দেওয়া নথিপত্র অনুযায়ী, ১৫ মার্চ তারিখে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার পরিকল্পনা এবং সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ‘সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়েছিল। এই ঘটনার জেরে ওয়াশিংটনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সদস্যদের বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সিগন্যাল’ অ্যাপটি সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত এবং এর মাধ্যমে কোনো গোপনীয় তথ্য আদান-প্রদান করা হয়নি।
তবে, এই বিতর্কের জল কতদূর গড়ায়, সেদিকে তাকিয়ে সবাই। কারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং সরকারি তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান