আমি যদি শীতকালে ভ্রমণের জন্য কোনো অসাধারণ জায়গার কথা বলি, তাহলে সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যের জ্যাকসন হোল-এর কথা সবার আগে আসবে। যারা স্কিইং ভালোবাসেন, তাদের জন্য তো এই জায়গাটি স্বর্গ, কিন্তু যারা স্কিইং করেন না, তাদের জন্যও এখানে অনেক কিছু উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
গ্র্যান্ড টিটন ন্যাশনাল পার্ক এবং ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত এই স্থানটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। শীতকালে বরফের চাদরে মোড়া পাহাড় আর বন্যপ্রাণীর দেখা পাওয়া যেন এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, জ্যাকসন হোল-এর জ্যাকসন হোল বিমানবন্দর (JAC) একটি বিশেষ স্থান। কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র বাণিজ্যিক বিমানবন্দর, যা একটি জাতীয় উদ্যানের ভেতরে অবস্থিত।
এখানে নামার পরেই আপনি প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। পর্যটকদের জন্য বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে মিমোসা পরিবেশন করা হয়, যা ভ্রমণকে আরও আনন্দ-দায়ক করে তোলে।
জ্যাকসন হোলে শীতের ছুটিতে আপনি কি কি করতে পারেন, তার কিছু ধারণা দেওয়া যাক। এখানকার গ্র্যান্ড টিটন ন্যাশনাল পার্কে বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ রয়েছে।
আপনি একটি ভ্যান ভাড়া করে বা কোনো ট্যুর কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে এই পার্কে যেতে পারেন। এখানকার গাইডরা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের পাখি, যেমন— ঈগল, এবং অন্যান্য বন্য প্রাণী, যেমন— এলক, বাইসন, মোজ-এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।
যারা একটু দুঃসাহসী, তারা চাইলে স্নোমোবাইলিং-এর মত অভিজ্ঞতাও নিতে পারেন। এখানে মহিলাদের জন্য বিশেষ স্নোমোবাইল ক্লিনিক-এর ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে নতুন এবং অভিজ্ঞ— উভয় ধরনের রাইডারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষকরা আপনাকে এই কঠিন যন্ত্রটি চালানোর কৌশল শেখাবেন।
শীতের ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করতে এখানকার স্পাগুলোতে যেতে পারেন। এখানকার “গ্র্যান্ডভিউ স্পা” খুবই জনপ্রিয়।
এখানে ম্যাসাজ, সল্ট লাউঞ্জ এবং আউটডোর হট-টাবের মতো সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও, আপনি স্কিইং-এর জন্য ব্যবহৃত “স্নো কিং মাউন্টেন রিসোর্ট”-এ গিয়ে এখানকার মানমন্দিরে রাতের আকাশে তারা দেখতে পারেন।
জ্যাকসন হোলের খাদ্যরসিকদের জন্যেও রয়েছে নানা আয়োজন। এখানে বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে আপনি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বাদের খাবার উপভোগ করতে পারবেন।
“মিলিয়ন ডলার কাউবয় বার”-এর মত জনপ্রিয় স্থানগুলোতে স্থানীয়দের আনাগোনা দেখা যায়। এছাড়া “পার্সফোন বেকারি”-র তাজা রুটি ও পেস্ট্রি, “কোয়ে টাভার্ন”, “কোড রেড ট্যাকোস”, “কাউবয় কফি” এবং “বিন২২”-এর মত স্থানগুলোও আপনার ভ্রমণকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে।
সব মিলিয়ে, জ্যাকসন হোল শীতের ছুটিতে প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া এবং একই সঙ্গে আরাম উপভোগ করার দারুণ একটি জায়গা। যারা স্কিইং ভালোবাসেন না, তারাও এখানে অন্য অনেক রকমের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার