1. [email protected] : adminb :
  2. [email protected] : Babu : Nurul Huda Babu
March 30, 2025 6:26 PM

চাকরি করে সংসার চলে না! পথে নামছেন সরকারি কর্মীরা?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Thursday, March 27, 2025,

শিরোনাম: জীবিকার টানে: জিম্বাবুয়ের সরকারি কর্মচারীরা এখন ফুটপাতের ব্যবসায়ী

খরার দেশ জিম্বাবুয়েতে জীবন ধারণের লড়াই ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। একদিকে মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে সরকারি বেতন কমে যাওয়া—এই পরিস্থিতিতে সেখানকার সরকারি কর্মচারীদের অনেকেই এখন জীবিকার অন্য পথ খুঁজছেন।

অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য তারা বেছে নিচ্ছেন ফুটপাতে ব্যবসা। সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হারারের বাসিন্দা ৪৭ বছর বয়সী ডুমিসানি গারা (ছদ্মনাম) দেশটির জাতীয় আবাসন ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। সরকারি বাসে চড়ে প্রতিদিন ভোরে অফিসে যান তিনি।

পোশাক পরিপাটি রেখে অফিসের কাজ করেন ঠিকই, কিন্তু দুপুরের খাবার খান বাড়ি থেকে আনা রুটি-তরকারি। কারণ, সরকারি সামান্য বেতনে সংসার চালানো কঠিন।

বিকাল ৫টা বাজতেই তিনি অফিসের পোশাক বদলে ফেলেন। এরপর ছুটে যান শহরের কেন্দ্রে, যেখানে তার ছেলে একটি দোকানে মুদিখানা সামগ্রী বিক্রি করে।

বাবার হাত ধরে এখন তিনিও সেই ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন।

ডুমিসানির মতো আরও অনেকে, বিশেষ করে শিক্ষক, তাদের সরকারি চাকরির বাইরে এই ধরনের কাজ করছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু বেতন সে তুলনায় খুবই কম।

পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। কেউ কেউ বলছেন, ছেলেমেয়েদের স্কুলের খরচ চালানো, পরিবারের সদস্যদের খাবার ও চিকিৎসা খরচ জোগানো, এমনকি ভাড়ার টাকা দিতেও সমস্যা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য তারা এই পথ বেছে নিয়েছেন।

জিম্বাবুয়ের শিক্ষক ইউনিয়নের নেতা তাকভাফিরা ঝাউয়ের মতে, সরকারি কর্মীদের এই ধরনের ব্যবসার মূল কারণ হলো—তাদের বেতন খুবই সামান্য। সরকারি হিসাবে দেশটির অর্থনীতির ১৮ শতাংশ আসে এই ধরনের ছোট ব্যবসা থেকে।

আর কর্মসংস্থানের ২০ শতাংশই হয় এই পথে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার এই সংখ্যাকে কম করে দেখায়।

বাস্তবে, জিম্বাবুয়ের অধিকাংশ মানুষই কোনো না কোনোভাবে এই ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

কিন্তু ফুটপাতে ব্যবসার কারণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের। হারারের একটি সুপার মার্কেটের ব্যবস্থাপক ট্রাইমোর চিরোজা বলেন, আগে যেখানে তারা কেবল ফল ও সবজি বিক্রি করতেন, এখন তারা মিনি-স্টোর খুলে বসেছেন। ফলে তাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে।

এদিকে, দেশটির সরকারও বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার তাদের ব্যবসার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করলেও ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে না।

ফলে একটি অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী এরই মধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

অর্থনীতিবিদ প্যাসেন্স মাওদজা মনে করেন, ব্যবসায়ীদের ওপর সরকারের কঠোর নিয়মকানুনের কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার দোকানগুলোর ওপর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে, কিন্তু ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে তেমনটা করে না।

অর্থনৈতিক মন্দা এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে জিম্বাবুয়ের অনেক সরকারি কর্মচারী এখন চরম আর্থিক সংকটে রয়েছেন। একদিকে বিদেশি মুদ্রার (ডলার) ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে, অন্যদিকে স্থানীয় মুদ্রা জিআইজি-র (ZiG) দাম কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য সরকারি কর্মচারীরা জীবিকার অন্য পথ খুঁজছেন। একদিকে যেমন তারা চেষ্টা করছেন, তেমনই চলছে টিকে থাকার লড়াই।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT