**ইউক্রেন যুদ্ধ: পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াই, দুর্বল হচ্ছে রাশিয়া? – অস্ত্রবিরতির মাঝেও বাড়ছে উত্তেজনা**
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি উভয় দেশ তাদের জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে, তবে এই অস্ত্রবিরতি এখনো পর্যন্ত কতটা কার্যকর, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনছে। একদিকে যেমন পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে, তেমনিভাবে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি আংশিক অস্ত্রবিরতি চুক্তি হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল উভয় দেশের জ্বালানি অবকাঠামোর উপর আক্রমণ বন্ধ করা। তবে, এই চুক্তির শর্তাবলী এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে এই চুক্তি ভাঙার অভিযোগ তুলেছে। রাশিয়া অভিযোগ করেছে যে ইউক্রেন তাদের জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, অন্যদিকে ইউক্রেন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সংবাদ সংস্থা এএল জাজিরার খবরে জানা যায়, একদিকে যখন অস্ত্রবিরতির চেষ্টা চলছে, তখন পূর্ব ইউক্রেনের ডনেটস্ক অঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। এই অঞ্চলে রুশ বাহিনী তাদের আক্রমণ জোরদার করেছে।
তবে, ইউক্রেনীয় সামরিক সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনারা এখানে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তাদের রসদ এবং জনবলও হ্রাস পাচ্ছে।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া এই অঞ্চলটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে বলেই এখানে তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় বাহিনী তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সংঘাতের মাঝে, উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করছে। রাশিয়া দাবি করছে যে ইউক্রেন তাদের পূর্বাঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে, যা তারা অস্বীকার করেছে।
এর পাশাপাশি, উভয় দেশই তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দাবি করছে।
যুদ্ধবিরতির আলোচনার মাঝে, বন্দী বিনিময়ের মতো ইতিবাচক ঘটনাও ঘটেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশই তাদের সৈন্যদের ফিরিয়ে দিয়েছে।
তবে, শান্তি ফিরিয়ে আনার পথ এখনো অনেক কঠিন।
যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞা। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করার কথা ভাবছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
অন্যদিকে, রাশিয়া চাইছে তাদের পণ্য, বিশেষ করে খাদ্য ও সারের বাজার পুনরায় চালু করতে, যার ফলে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা যায়। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার উপর চাপ বজায় রাখার পক্ষে।
সংঘাতের এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই তাদের অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে। একদিকে যেমন যুদ্ধ চলছে, তেমনিভাবে কূটনৈতিক আলোচনাও অব্যাহত রয়েছে।
তবে, শান্তি ফিরিয়ে আনা এখনো অনেক দূরের পথ বলেই মনে হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা