যুক্তরাজ্য সরকার বিতর্কিত একটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, যেখানে তারা ভারত মহাসাগরের চাগোস দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ মরিশাসকে হস্তান্তরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন, যা দ্বীপপুঞ্জের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হস্তান্তরের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।
চাগোস দ্বীপপুঞ্জ, বিশেষ করে এখানকার বৃহত্তম দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের একটি যৌথ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এই ঘাঁটির নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাজ্যের পরিকল্পনা হলো, দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব মরিশাসকে দেওয়া হবে, তবে দিয়েগো গার্সিয়ার সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ তারা ৯৯ বছরের জন্য বহাল রাখবে।
এই চুক্তির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই অনেকে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দলের কিছু প্রভাবশালী সদস্য এবং যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরের কয়েকজন এই চুক্তির বিরোধিতা করছেন।
তাদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হলো, মরিশাসের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক। তাদের মতে, মরিশাসের হাতে দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ গেলে সামরিক ঘাঁটির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
যদিও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা বলছেন, মরিশাস ও চীনের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে, এবং এই অঞ্চলে ভারতের প্রভাব অনেক বেশি।
চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার আগে, মরিশাসে সরকার পরিবর্তনের কারণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ার পর, এটি এখন চূড়ান্ত রূপ নিতে চলেছে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা এবং সামরিক ঘাঁটির বৈধতা রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এছাড়াও, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে বিদেশি লবিস্টদের নিবন্ধনের একটি নতুন স্কিম চালু হতে যাচ্ছে, যেখানে চীন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর কার্যক্রমের ওপর নজরদারি বাড়ানো হবে।
এই স্কিমের আওতায়, যারা বিদেশি সরকারের নির্দেশে যুক্তরাজ্যে কোনো কাজ করবে, তাদের তা ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায়, তাদের পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
চাগোস দ্বীপপুঞ্জের এই হস্তান্তরের ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা এবং সামরিক কৌশলগত দিক থেকে এর তাৎপর্য রয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান