শীর্ষকের প্রস্তাবনা: দুর্বল স্বাস্থ্য, নির্বাচনের আগে ব্যাকফুটে বাইডেন: নতুন বইয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা নিয়ে নতুন একটি বইয়ে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে বাইডেনের সাবেক চিফ অফ স্টাফের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিতর্কের আগে বাইডেন “মানসিকভাবে বিপর্যস্ত” ছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বুঝতে তার সমস্যা হচ্ছিল।
এই ঘটনায় বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল এবং পরবর্তীতে ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রার্থীপদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
ক্রিস হুইপলের লেখা “আনচার্টেড: হাউ ট্রাম্প বিট বাইডেন, হ্যারিস, অ্যান্ড দ্য অডস ইন দ্য ওয়াইল্ডেস্ট ক্যাম্পেইন ইন হিস্টোরি” নামক এই বইয়ে বাইডেনের নির্বাচনি প্রচারণার ভেতরের অনেক অজানা কথা তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে বাইডেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রন ক্লেইনের ভাষ্য অনুযায়ী, বিতর্কের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বাইডেন এতটাই ক্লান্ত ছিলেন যে তিনি ট্রাম্পের বক্তব্য বুঝতে পারছিলেন না।
এমনকি তিনি মাঝেমধ্যে প্রস্তুতি সেশন থেকে উঠে গিয়ে বিশ্রাম নিতেন।
বইটিতে আরও বলা হয়েছে, বাইডেন বিভিন্ন দেশের নেতাদের নিয়ে বেশি চিন্তা করতেন এবং তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ছিল না।
ক্লেইন জানান, বাইডেন প্রায়ই বলতেন, “এই নেতারা বলছেন আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে খুব ভালো কাজ করছি, তার মানে আমি একজন ভালো প্রেসিডেন্ট।”
বইটির তথ্য অনুযায়ী, বিতর্কের আগে বাইডেনকে প্রস্তুত করার জন্য বেশ কয়েকবার মহড়া দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও তার দুর্বলতা ধরা পড়ে।
প্রথম ৯০ মিনিটের একটি মহড়া ৪৫ মিনিটেই শেষ করতে হয়, কারণ বাইডেনের কণ্ঠস্বর ভেঙে গিয়েছিল এবং তিনি বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারছিলেন না।
বাইডেন দ্বিতীয় মেয়াদে তার এজেন্ডা সম্পর্কে কিছু বলতে পারছিলেন না। ক্লেইন বাইডেনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনি এতে রাজি হননি।
বাইডেন নাকি বলেছিলেন, তিনি খুব ক্লান্ত এবং তার ঘুম দরকার।
বিতর্কের দিন, বাইডেন নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট পরেই অনুষ্ঠানে পৌঁছান। ক্লেইন জানিয়েছেন, বাইডেন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, তাই তার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় ছিল না।
বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল খুবই দুর্বল। তিনি কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় তোতলিয়েছেন, চুপ করে ছিলেন এবং তার মধ্যে বেশ অস্থিরতা দেখা গেছে।
বইটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাইডেনের এমন দুর্বল পারফরম্যান্সের পর ডেমোক্রেটদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। এমনকি দলের অনেক শীর্ষ নেতাও বাইডেনের প্রার্থীপদ ধরে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
পরবর্তীতে, বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে কমলা হ্যারিস দলের মনোনয়ন পান। যদিও হ্যারিস নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান