ভূমধ্যসাগরের দ্বীপপুঞ্জে আকস্মিক বন্যা, আসন্ন ইস্টার উৎসবের আগে চরম দুর্ভোগ।
গ্রিসের এজিয়ান সাগরের দ্বীপগুলোতে সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দ্বীপগুলোর বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আসন্ন ইস্টার উৎসবের আগে এমন দুর্যোগে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে প্যারোস, মাইকোনোস, ক্রিট ও রোডস দ্বীপ।
প্যারোসের মেয়র কোস্টাস বিজেস জানিয়েছেন, কয়েক দশকের মধ্যে এমন দুর্যোগ তারা দেখেননি। মাত্র দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
প্যারোসের নাওসা বন্দর এলাকা কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে ‘কাদার লেকে’ পরিণত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে এখানকার রাস্তাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এছাড়া, মাইকোনোসে শিলাবৃষ্টির কারণে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যা সেখানকার সাদা দেয়ালযুক্ত অলিগলিতে কাদা নিয়ে আসে। ক্রিটের চানিয়া শহরেও ‘বাইবেলের ধ্বংসযজ্ঞের’ মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানকার রাস্তা, হাসপাতাল এবং আদালত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন অতিবৃষ্টি এখন অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে পর্যটন নির্ভর দ্বীপগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত নির্মাণ ও অপরিকল্পিত নগরায়নকে এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করছেন।
তাদের মতে, নির্বিচারে বাড়িঘর তৈরি, পুরনো ভবন সংস্কার না করা এবং বন্যা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অভাবে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে।
পর্যটকদের জন্য তৈরি করতে গিয়ে প্রাকৃতিক জলধারা ভরাট করে ফেলায় বৃষ্টির পানি দ্রুতগতিতে নিচে নেমে এসে ঘরবাড়ি প্লাবিত করছে। এই পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে বৃষ্টির পানি ধারণ ও ধীরে ধীরে তা ছাড়ার ব্যবস্থা করা দরকার।
দ্বীপগুলোর প্রাক্তন মেয়র কনস্টানটিনোস কওকাস বলেন, “পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে এখানে পর্যাপ্ত অর্থ বিনিয়োগ করা হয় না।
জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণের সুরক্ষায় আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রিসের অর্থনীতিতে পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, কিন্তু দ্বীপগুলোর দুর্বল অবকাঠামো এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে গ্রীষ্মকালে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়লেও শীতকালে তা কমে যায়।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম