ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার জেরে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা, মার্কিন বাজারে ধস।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি ঘোষণার ফলস্বরূপ বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এই ঘোষণার পর, বিশ্বের বৃহত্তম কোম্পানিগুলোর বাজার মূল্যে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের পতন হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার আশঙ্কা বেড়েছে।
এর ফলে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
মার্কিন শেয়ার বাজারে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছে। টেক-নির্ভর নাসডাক সূচক ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, যেখানে এসএন্ডপি ৫০০ এবং ডাউ জোনসের পতন হয়েছে যথাক্রমে ৪.৮% এবং ৩.৯%।
বাজারের এই অস্থিরতার কারণ হিসেবে ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে দায়ী করা হচ্ছে। বিশেষ করে, অ্যাপল এবং এনভিডিয়ার মতো বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সম্মিলিতভাবে প্রায় ৪৭০ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি) ক্ষতি হয়েছে।
যদিও বাজারের এই খারাপ পরিস্থিতিতেও ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, সবকিছু ভালোভাবেই চলছে এবং বাজার দ্রুত পুনরুদ্ধার করবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি মনে করি এটা খুব ভালো হচ্ছে… বাজার দ্রুত বাড়বে এবং দেশের উন্নতি হবে।
এদিকে, ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতির তীব্র সমালোচনা করে রিপাবলিকান সিনেটররা একে “খারাপ নীতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনায় কানাডা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা পিট হেগসেথের বিরুদ্ধে সামরিক বিষয়ে সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ ‘সিগন্যাল’ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া, হোয়াইট হাউসে কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করেছেন ট্রাম্প। অভিযোগ রয়েছে, তারা ট্রাম্পের প্রতি অনুগত ছিলেন না।
স্বাস্থ্যখাতেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ড. মেহমেত ওজকে সেন্টারস ফর মেডিকেয়ার অ্যান্ড মেডিকেইড সার্ভিসেসের প্রধান হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
আইনগত জটিলতাও পিছু ছাড়ছে না ট্রাম্পের।
ইংল্যান্ডের একটি আদালত তাকে একটি মামলায় হেরে যাওয়ার পর প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার ডলার (প্রায় ৯ কোটি টাকার বেশি) ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, সিনেটররা শুল্কের ওপর কংগ্রেসের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
তারা নতুন একটি দ্বিদলীয় বিল পেশ করেছেন, যার মাধ্যমে শুল্কের বিষয়ে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
বর্তমানে, বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায়, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও সরাসরি কোনো প্রভাব এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি, তবে বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও সতর্ক থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian