নয়াদিল্লী ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই থাইল্যান্ডে এক আঞ্চলিক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনুস। গত আট মাস আগে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দুই নেতার মধ্যে এই প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
বৈঠকে দুই নেতাকে হাসিমুখে করমর্দন করতে দেখা যায়, যা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বৈঠকের বিষয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বিক্রম মিসরি সাংবাদিকদের জানান, মোদী ‘গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন’।
বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত ‘নির্যাতন’ নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। অন্যদিকে, মুহাম্মদ ইউনুস ভারতের কাছে শেখ হাসিনার নির্বাসন এবং তাঁর রাজনৈতিক মন্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা।
এরপর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে কিছুটা অবনতি হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের নতুন সরকার চীন ও পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকেছে। সম্প্রতি, ইউনুসের চীন সফর এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর ঘটনা তারই প্রমাণ।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বিক্রম মিসরি জানান, দুই নেতা মূলত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে, বৈঠকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে, ভারতের একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’-এর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান হর্ষ পান্ত মনে করেন, মোদী ও ইউনুসের এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে ‘সম্পর্ক পুনর্গঠনের’ সূচনা করতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা