গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের চেষ্টার অভিযোগে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো নির্যাতন, উদ্বাস্তু করা এবং তাদের ভূমি দখলের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলিদের মুক্তির বিষয়টি এখন নেতানিয়াহুর কাছে গৌণ। বরং, তিনি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে কাজ করছেন।
নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপের কারণে গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও বাড়ছে। সেখানকার সাধারণ মানুষ খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন নিয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। এর অংশ হিসেবে গাজাকে ধ্বংস করে সেখানে ফিলিস্তিনিদের জীবন ধারণের অযোগ্য করে তোলার চেষ্টা চলছে।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রেও হামলা চালানো হচ্ছে।
প্রতিবেদনে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের জীবন নিয়ে খেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। একইসঙ্গে, হামাসকে নির্মূল করার অজুহাতে গাজাকে ধ্বংস করার অভিযোগও উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত গ্রিস ও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর নেতানিয়াহুকে সমর্থন জানানোয় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নীরব দর্শক হয়ে থাকলে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন আরও বাড়বে। নেতানিয়াহু ও তার সরকার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কোনো প্রকার শান্তি আলোচনাতেও আগ্রহী নয়।
বরং, তাদের মূল লক্ষ্য হলো, গাজা ও পশ্চিম তীরকে সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে আনা।
ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা এবং নেতানিয়াহুর পদক্ষেপের কারণে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও অসন্তোষ বাড়ছে। অনেক ইসরায়েলি নাগরিক তাদের স্বজনদের মুক্তির জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন।
তবে, নেতানিয়াহু সরকার এক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
সর্বোপরি, আল জাজিরার প্রতিবেদনে গাজায় চলমান সংকটকে একটি গভীর মানবিক বিপর্যয় হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে, নেতানিয়াহুর নীতির কারণে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা