1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 16, 2025 12:34 AM
সর্বশেষ সংবাদ:

সিয়েরা লিওনের নারীদের জীবনে কুশের ভয়ংকর প্রভাব! জরুরি ঘোষণার পরেও কেন পিছিয়ে?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Saturday, April 5, 2025,

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে ‘কুশ’ নামক এক শক্তিশালী মাদকদ্রব্যের বিস্তার ঘটেছে, যা জনস্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটির সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও, মাদকাসক্ত নারীদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

বরং, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তারা আরও বেশি অসহায় হয়ে পড়েছেন।

ফ্রিটাউনের একটি বিশাল ময়লার স্তূপের পাশে বসে থাকা জয়নব নামের এক নারী জানান, কুশ-এর নেশা তাকে কতটা দুর্বল করে দিয়েছে। মাদক না নিলে তার শরীর অসুস্থ হয়ে যায়।

জয়নবের মতো আরও অনেক নারী আছেন, যারা কুশের নেশায় জর্জরিত এবং সমাজের প্রতিকূলতার শিকার। দারিদ্র্য, সামাজিক বৈষম্য এবং কুসংস্কারের কারণে তারা সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সরকার মাদক নির্মূলে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও, পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোতে নারীদের উপস্থিতি খুবই কম। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মাদকাসক্তিতে আক্রান্ত প্রতি ১৮ জন নারীর মধ্যে মাত্র ১ জন চিকিৎসা পান, যেখানে প্রতি ৭ জন পুরুষের মধ্যে ১ জন চিকিৎসার সুযোগ পান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীরা সাধারণত লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হন, যা তাদের দুর্বল করে তোলে। কুশের নেশা তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তোলে।

অনেক নারী যৌনকর্মে বাধ্য হন, যা তাদের শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

কুশের বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এর উপাদানগুলো সহজে পরিবর্তন করা যায় এবং এটি সহজলভ্য। এছাড়াও, মাদকটি খুব সস্তা হওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এর ব্যবহার বাড়ছে।

মাদক পরীক্ষার ফলাফলে জানা গেছে, কুশের কিছু নমুনায় ফেনটানিলের চেয়ে ২৫ গুণ শক্তিশালী উপাদান পাওয়া গেছে।

স্থানীয় একটি নারী অধিকার সংস্থা ‘উইমেন ফর উইমেন ফাউন্ডেশন’-এর কর্মী কাদিআতু কোরোমা জানান, তাদের সংস্থায় নারীদের মাদক ব্যবহারের ঘটনা বেড়েছে। মাদক গ্রহণের পর নারীরা দুর্বল হয়ে পড়লে পুরুষরা তাদের ওপর যৌন নির্যাতন চালায়।

সিয়েরা লিওনের কিসি মনোরোগ হাসপাতালে কর্মরত নার্স কাদিআতু ডাম্বুয়ানা জানান, তিনি গত ছয় বছরে কুশ-এর নেশাগ্রস্ত যত রোগীর চিকিৎসা করেছেন, তাদের ৯০ শতাংশই এই নেশা টিকিয়ে রাখতে শরীর বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির দুটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাত্র ৩০০ জন মাদকাসক্ত চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা খুবই কম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নারীদের সমাজে পুনর্বাসন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ তাদের জীবিকার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। সরকারি সহায়তা এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নয়।

অনেক সময় পরিবারের সদস্যরাও তাদের পাশে দাঁড়াতে চায় না।

সিয়েরা লিওনের পরিস্থিতি বাংলাদেশের মাদক পরিস্থিতি থেকে খুব ভিন্ন নয়। এখানেও মাদকাসক্ত নারীদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেই। এছাড়া, মাদকাসক্ত নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক ধারণা তাদের জন্য একটি বড় বাধা।

এই সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। নারীদের জন্য বিশেষায়িত পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করা, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, এবং সমাজে তাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT