বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর জোট জি-৭ এর শীর্ষ সম্মেলন এবার কানাডার আলবার্টা প্রদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে বৈঠকের শুরুতেই ইসরায়েল-ইরান সংকট এবং বাণিজ্য নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্র দেশগুলোর টানাপোড়েন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে।
খবর অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশের নেতারা যখন সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডার পার্বত্য অঞ্চলে জড়ো হচ্ছেন, তখন বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন দেশের নেতারা শুল্ক আরোপের মতো বিষয়গুলো নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চাইছেন।
এমন পরিস্থিতিতে এবারের জি-৭ সম্মেলন ঐক্যের পরিবর্তে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মঞ্চে পরিণত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। সম্মেলনে ট্রাম্পের উপস্থিতি একটি বড় ফ্যাক্টর, কারণ তাঁর বিভিন্ন মন্তব্য অনেক সময়েই বিতর্কের জন্ম দেয়।
কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর হুমকি এবং গ্রিনল্যান্ড দখলের মতো বিষয়গুলো এরই মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সংকট নিরসনের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ব্রিটেন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমানসহ সামরিক সহায়তা পাঠাচ্ছে।
স্টারমার আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তাঁদের দীর্ঘদিনের উদ্বেগ রয়েছে। একইসঙ্গে, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে তাঁরা সমর্থন করেন।
তবে পরিস্থিতিকে শান্ত করতে হবে, কারণ এতে পুরো অঞ্চলে সংঘাত আরও বাড়তে পারে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গ্রিনল্যান্ডে পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি আর্কটিক অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ম্যাক্রোঁর এই সফর সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত সীমান্ত রক্ষার নীতিকে সমর্থন করার বার্তা দেয়।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সম্মেলনের শুরুতে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার প্রথা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর কারণ সম্ভবত ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যান্য নেতাদের আলোচনা সহজ করা।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টিও সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
সাবেক কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্রিতিয়েন মনে করেন, ট্রাম্প যদি কোনো বিতর্কিত মন্তব্য করেন, তবে নেতাদের শান্ত থাকা উচিত। তিনি বলেন, “ট্রাম্প সাধারণত একগুঁয়ে স্বভাবের।
যদি তিনি আলোচনায় আসার জন্য কোনো কাজ করেন, তবে তাঁকে করতে দিন, আপনারা স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে থাকুন।”
যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, যেখানে ব্রিটিশ গাড়ি, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর কথা রয়েছে।
জি-৭ সম্মেলনে ভারত, ইউক্রেন, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর নেতারাও আমন্ত্রিত হয়েছেন।
বাণিজ্য সম্পর্ক এবং শুল্ক কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস