হংকংয়ের শেয়ার বাজারে ১৯৯৭ সালের আর্থিক সংকটের পর সবচেয়ে বড় দরপতন।
হংকংয়ের শেয়ার বাজারে সোমবার বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণার জেরে বাজারে এই অস্থিরতা দেখা দেয়।
দিনশেষে, প্রধান সূচক, হ্যাং সেং ইনডেক্স ১৩.২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়, যা ১৯৯৭ সালের এশীয় আর্থিক সংকটের পর একদিনের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন।
ওই সময় সূচকটি ১৩.৭ শতাংশ কমেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপ এবং চীনের পাল্টা পদক্ষেপের কারণে এই দরপতন হয়েছে।
গত সপ্তাহে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।
হংকংয়ের অর্থনীতিবিদ কার্লোস কাসানোভা এক সাক্ষাৎকারে জানান, “শুক্রবারে হংকংয়ে সরকারি ছুটি ছিল, তাই আমরা এখন ট্রাম্পের শুল্ক এবং চীনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া দেখছি।
এটি একটি দ্বিগুণ আঘাত।”
শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতা শুধু হংকংয়েই সীমাবদ্ধ নেই।
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরের শেয়ার বাজারেও বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজার থেকে ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি মূলধন হারিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার এরই মধ্যে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করতে শুরু করেছে এবং বুধবার থেকে এই শুল্কের হার ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের অর্থনীতির ওপর শুল্কের প্রভাব সম্পর্কে হংকংয়ের বাজার চীনের মূল ভূখণ্ডের বাজারের চেয়ে বেশি সঠিক ধারণা দেয়।
কারণ, চীনে শেয়ার কেনাবেচায় কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে, যা হংকংয়ে নেই।
এই দরপতনের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিও এর থেকে দূরে নয়।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অস্থিরতা দেখা দিলে, এর প্রভাব বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর পড়তে পারে।
এছাড়া, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারেও মূল্যবৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, “বিশ্ব অর্থনীতির এই ধরনের পরিবর্তনে আমাদের দেশের অর্থনীতিতেও ঝুঁকি তৈরি হয়।
তাই, সরকার এবং ব্যবসায়ীদের একসঙ্গে কাজ করে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা