ব্ল্যাক মিরর: প্রযুক্তির যুগে ভালোবাসার গল্প আর মানবিকতার উষ্ণ ছোঁয়া।
প্রযুক্তি আর মানুষের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে তৈরি হওয়া জনপ্রিয় সিরিজ ‘ব্ল্যাক মিরর’-এর সপ্তম সিজন মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। আর এবারকার সিজনে লেখক চার্লি ব্রুকার যেন একটু অন্য পথে হেঁটেছেন।
পরিচিত ডার্ক থিমের সঙ্গে মিশেছে মানবিক অনুভূতির গভীরতা, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে।
নতুন সিজনের গল্পগুলোতে প্রযুক্তির ভয়ংকর দিকগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি, মানুষের আবেগ, স্মৃতি, আর ভালোবাসার গল্পগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগের সিজনগুলোতে সমাজের উপর প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবগুলো নিয়ে অনেক বেশি জোর দেওয়া হতো।
তবে এবারকার সিজনে, সেই চিরাচরিত ধারা থেকে বেরিয়ে এসে গল্প বলার ধরনে এসেছে পরিবর্তন।
সপ্তম সিজনের শুরুটা হয়েছে ‘ইউএসএস ক্যালিস্টার: ইনটু ইনফিনিটি’ নামের একটি পর্ব দিয়ে। আগের সিজনের একটি জনপ্রিয় পর্বের ধারাবাহিকতা এটি।
তবে সমালোচকদের মতে, নতুনত্বের অভাবে এটি আগের মতো আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারেনি। এরপর একে একে উন্মোচন হয় আরও পাঁচটি নতুন গল্প।
এবারের সিজনের অন্যতম আকর্ষণ হলো ‘কমন পিপল’ নামের একটি পর্ব। এখানে দেখা যায়, একজন সাধারণ দম্পতির জীবন, যাদের ভালোবাসা আর সংসারের টানাপোড়েন—সবকিছুই যেন প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িয়ে।
স্ত্রীর ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ার পর, চিকিৎসা হিসেবে আসে ক্লাউডে তার মস্তিষ্কের প্রতিস্থাপন। কিন্তু সেই প্রযুক্তিনির্ভর জীবনের খরচ এবং শর্তগুলো তাদের জন্য এক নতুন সংকট তৈরি করে।
এছাড়াও, ‘হোটেল রেভারি’ নামের একটি পর্বে দেখা যায়, একজন অভিনেত্রীর গল্প। যেখানে তিনি একটি বিশেষ ধরনের সিনেমায় অভিনয় করেন, যেখানে তার চরিত্রকে একটি এআই-নির্মিত জগতে প্রবেশ করানো হয়।
এই গল্পটি দর্শকদের কল্পনার জগৎকে নাড়া দেয়, যা দর্শককে বাস্তবতার বাইরে অন্য এক জগতে নিয়ে যায়।
‘ইউলোজি’ নামের পর্বটি ভালোবাসার স্মৃতি আর অনুভূতির এক দারুণ চিত্র। এখানে একজন মানুষ তার অতীতের ছবিগুলোর মাধ্যমে প্রিয়জনের স্মৃতিগুলো খুঁজে ফেরেন।
পুরনো দিনের চিঠি, টেপ—এসবের মধ্যে তিনি খুঁজে পান তার হারানো ভালোবাসাকে।
তবে, ‘বেট নয়ার’ নামের একটি পর্বে আগের মতোই থ্রিলার এবং সাসপেন্স বজায় রাখা হয়েছে। এখানে অফিসের ভেতরের কিছু জটিলতা এবং সন্দেহের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
গল্পের শেষে দর্শকদের জন্য রয়েছে অপ্রত্যাশিত চমক।
তবে, সপ্তম সিজনের সব গল্প দর্শক-মনে দাগ কাটতে পারেনি। ‘প্লেথিং’ নামের পর্বটি তেমন একটা আলোচনা সৃষ্টি করতে পারেনি।
সবমিলিয়ে, ব্ল্যাক মিররের এই নতুন সিজনটি দর্শকদের জন্য ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে। প্রযুক্তির ভয়ংকর রূপের পাশাপাশি, মানবিক সম্পর্কের গভীরতা ও ভালোবাসার গল্পগুলো দর্শকদের মন জয় করবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian