যুক্তরাজ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর মূল কারণ হলো, ইউরোপে মুখ ও পায়ের রোগ (Foot-and-Mouth Disease – FMD) বেড়ে যাওয়ায় তা প্রতিরোধ করা।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, যারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করছেন, তারা এখন থেকে ইইউ থেকে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য মাংস অথবা দুগ্ধজাত পণ্য আনতে পারবেন না।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় গরু, ভেড়া, ছাগল বা শূকরের মাংস এবং দুগ্ধজাত সকল পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি স্যান্ডউইচের মতো খাবারেও যদি এই উপাদানগুলো থাকে, তবে তা কাস্টমসে আটক করা হবে।
মাংস প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে কিনা বা শুল্কমুক্ত দোকান থেকে কেনা হয়েছে কিনা, তা বিবেচ্য হবে না। কাঁচা মাংস ও দুধও এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত।
যদিও মুখ ও পায়ের রোগ (FMD) সরাসরি মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে এটি গবাদি পশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে। যুক্তরাজ্যের খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রী ড্যানিয়েল জেইচনার জানিয়েছেন, ব্রিটিশ খামারিদের এই রোগ থেকে বাঁচাতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।
তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রোগটি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা এবং যুক্তরাজ্যের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
যুক্তরাজ্যের ডেপুটি চিফ ভেটেরিনারি অফিসার (আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্য বিষয়ক) জর্জে মার্টিন-আলমাগ্রো বলেছেন, এই রোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় জরুরি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি খামারিদের পশুদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সতর্ক থাকতে এবং কোনো রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। শিশুদের দুধ, বিশেষ খাদ্য এবং কিছু মিশ্রিত পণ্যের (যেমন – চকলেট, মিষ্টান্ন, রুটি, কেক, বিস্কুট ও পাস্তা) সীমিত পরিমাণে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।
যদি কোনো ব্যক্তি এই নিষিদ্ধ পণ্যগুলো বহন করেন, তবে তাদের হয় সেগুলো সীমান্তেই জমা দিতে হবে, অথবা তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে, ইংল্যান্ডে এই নিয়ম ভাঙলে ৫,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ লক্ষ টাকার সমান।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ইউরোপে এই রোগের প্রাদুর্ভাব যুক্তরাজ্যের খামার এবং পশুসম্পদের জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান