মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তের কিছু অংশে সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিয়েছেন। শুক্রবার দেরিতে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়, যেখানে অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সীমান্ত সুরক্ষার নতুন নীতিমালার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশের ফলে সশস্ত্র বাহিনী সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে আরও সরাসরি ভূমিকা নিতে পারবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা বিভাগকে ফেডারেল ভূমি, যেমন রুজভেল্ট রিজার্ভেশন-এর উপর নিয়ন্ত্রণ নিতে দেওয়া হবে। এই রিজার্ভেশনটি ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং নিউ মেক্সিকোর ৬০ ফুট প্রশস্ত একটি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
এর ফলে সেখানে মোতায়েন করা সৈন্যদের, অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটক করার আইনি অধিকার থাকবে। এরপর তাদের অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সামরিক কার্যক্রমের মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি এবং নজরদারি সরঞ্জাম স্থাপনও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলে জানা গেছে। প্রতিরক্ষা সচিব, পিট হেগসেথ, এই নির্দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের মূল্যায়ন ৪৫ দিন পর করবেন।
তবে, যেকোনো সময় হেগসেথ এই নির্দেশের আওতাভুক্ত ফেডারেল ভূমির পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
তবে, এই সামরিকীকরণের আওতায় আদিবাসী সংরক্ষণ এলাকাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। শুক্রবারের এই সিদ্ধান্ত অভিবাসন নীতির প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের ধারাবাহিক মনোযোগের একটি অংশ। এর আগে, সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার, একজন মার্কিন ফেডারেল বিচারক রায় দিয়েছেন যে, যারা দেশের নাগরিক নন, তাদের ফেডারেল সরকারের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। যদিও সমালোচকরা বলছেন যে, ১৯৪০-এর দশকে এই আইন প্রণীত হওয়ার পর থেকে এটি ব্যাপকভাবে কার্যকর করা হয়নি।
এই রায়টি আসে, যখন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি নতুন এই প্রয়োজনীয়তা ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, যারা রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হবে, তাদের জরিমানা বা কারাদণ্ড হতে পারে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের এই পদক্ষেপকে ‘পসে কমিতাটাস অ্যাক্ট’-এর একটি কৌশলী বাইপাস হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই আইনটি মার্কিন সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক আইন প্রয়োগের কাজে জড়িত হওয়া থেকে বিরত রাখে।
ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান সহযোগীদের দ্বারা প্রায়শই সীমান্ত সামরিকীকরণের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করে আসা অভিবাসীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ফেনটানিলের বিস্তার। যদিও সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ফেনটানিল পাচারের অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে ৯০ শতাংশই মার্কিন নাগরিক।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান