নিউ ইয়র্কের হাডসন নদীতে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে ছিলেন এক স্প্যানিশ দম্পতি এবং তাদের তিনটি সন্তান। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতদের শনাক্ত করতে স্প্যানিশ মহিলা মার্স ক্যামপ্রুবি মন্টালের ভাই জোয়ান ক্যামপ্রুবি মন্টাল ছুটে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল, তিনি স্পেন থেকে নিউ জার্সিতে পৌঁছান। তিনি তার বোন, বোনের স্বামী অগাস্টিন এসকোবার এবং তাদের তিন সন্তানের মরদেহ শনাক্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন।
জানা গেছে অগাস্টিন এসকোবার স্পেনের সিমেন্স রেল অবকাঠামো বিভাগের প্রধান নির্বাহী ছিলেন। মার্সও সিমেন্সে কর্মরত ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর শনিবার, ১২ই এপ্রিল, জার্সি সিটি মেয়র স্টিভেন ফুলপ জানান, মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া এখনো চলছে। তিনি আরও জানান, নিহতদের পরিবারকে মরদেহ স্পেনে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
স্প্যানিশ কনস্যুলেট এবং সিমেন্সও এই কাজে সহায়তা করছে।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নিউ জার্সির হাডসন কাউন্টি মেডিকেল পরীক্ষকের কার্যালয় কাজ করছে। মেয়র ফুলপ জানান, তারা মৃত্যুর কারণ হিসেবে পানিতে ডুবে যাওয়া নাকি হেলিকপ্টারের প্রপেলার জড়িত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)-এর রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।
দুর্ঘটনা স্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জোয়ান ক্যামপ্রুবি মন্টাল তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তাদের ভুলব না। আমরা তাদের হাসি আমাদের হৃদয়ে বাঁচিয়ে রাখব।
জোয়ান আরও জানান, “এই পরিস্থিতি খুবই কঠিন, তবে আমরা অসংখ্য সমবেদনা পেয়েছি। তারা একসঙ্গে চলে গেছে, কোনো কষ্ট ছাড়াই, তাদের মুখে হাসি ছিল। আমাদের জন্য এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার, ১০ই এপ্রিল, নিউ ইয়র্ক শহরের কাছে হাডসন নদীর উপরে একটি পর্যটন কোম্পানির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারটি নিউ ইয়র্ক শহর থেকে উড্ডয়ন করার কিছুক্ষণ পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে পাইলটসহ মোট ছয়জন ছিলেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এসকোবার পরিবার ব্যবসার কাজে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল এবং মার্সের জন্মদিন উপলক্ষে তারা তাদের ভ্রমণ বাড়িয়েছিল।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, নিহত শিশুদের মধ্যে একজনের ঘটনার পরের দিন জন্মদিন ছিল। তিনি বলেন, “এটি সম্ভবত শহরটি আকাশ থেকে দেখার একটি সাধারণ পর্যটন আকর্ষণ ছিল। তবে এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা এবং আমরা শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) কাজ করছে। জানা গেছে, বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি ছিল একটি বেল-২০৬ মডেলের।
নিউ ইয়র্ক হেলিকপ্টার্সের প্রধান নির্বাহী মাইকেল রথ জানান, দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে পাইলট রেডিওর মাধ্যমে জ্বালানির জন্য হেলিপ্যাডে ফেরার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, “আমাদের কোম্পানির প্রত্যেক কর্মচারী গভীরভাবে শোকাহত। কোনো মানুষের সন্তানের মৃত্যু একটি বিশাল বিপর্যয়।
তথ্য সূত্র: পিপল