ট্রাম্প ও পোপ ফ্রান্সিস: ভিন্ন আদর্শের দুই নেতার সম্পর্ক
বিশ্বজুড়ে বহুল আলোচিত দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পোপ ফ্রান্সিস। তাদের রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন ছিল একে অপরের থেকে ভিন্ন, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে মিলও খুঁজে পাওয়া যায়।
দুজনেই ছিলেন তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে বহিরাগত এবং পরিবর্তনের বার্তাবাহক। তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক, নীতিগত পার্থক্য এবং বিভিন্ন সময়ে তাদের সাক্ষাৎ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র এখানে তুলে ধরা হলো।
২০১৩ সালে পোপ ফ্রান্সিস নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার সাদামাটা জীবনযাত্রা সবার নজর কাড়ে। সাধারণ মানুষের কাছাকাছি থাকার এই প্রবণতা তাকে অন্য পোপদের থেকে আলাদা করে।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী, যিনি সব সময় নিজের জৌলুস বজায় রাখতে পছন্দ করতেন।
তাদের মধ্যেকার মতপার্থক্যগুলো স্পষ্ট ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে।
অভিবাসন নীতি এবং পরিবেশ রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে তাদের অবস্থান ছিল ভিন্ন। ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার পক্ষে ছিলেন, যেখানে পোপ ফ্রান্সিস অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন।
পরিবেশ রক্ষার বিষয়েও তাদের মধ্যে ভিন্নতা ছিল। ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন, যা পোপ ফ্রান্সিসের আহ্বানের বিপরীত ছিল।
২০১৭ সালে ভ্যাটিকানে তাদের মধ্যে একটি সাক্ষাৎ হয়। এই সাক্ষাতে তারা অভিবাসন এবং পরিবেশের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
এই সময় ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ঐতিহ্যবাহী কালো পোশাক পরে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিস ট্রাম্পকে শান্তি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে একটি জলপাই গাছের ছবি খোদাই করা পদক উপহার দেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের সম্পর্ক ছিল বেশ ভালো।
২০১৫ সালে পোপ ফ্রান্সিস যখন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন, তখন ওবামা তাকে বিশেষভাবে স্বাগত জানান। এছাড়া, জো বাইডেনের সঙ্গেও পোপের সুসম্পর্ক ছিল।
বাইডেনকে তিনি একজন “ভালো ক্যাথলিক” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পোপ ফ্রান্সিস এবং ট্রাম্পের মধ্যেকার সম্পর্ক সব সময় সহজ ছিল না।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন, এটি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সম্মানহানি করবে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পও পোপের কিছু নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করতেন।
পোপ ফ্রান্সিস এবং ট্রাম্পের সম্পর্ক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তাদের ভিন্ন আদর্শ এবং দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও, বিশ্বনেতা হিসেবে তারা দুজনেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তাদের সম্পর্ক বিশ্ব রাজনীতি এবং ধর্মীয় অঙ্গনে একটি বিশেষ স্থান তৈরি করেছে, যা আজও আলোচনার বিষয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন