বৈবাহিক কলহ: বিদেশ ভ্রমণে জেদের ফল, পরিবারের শান্তি কি বিঘ্নিত?
সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন চললে অনেক সময় সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরে। তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী পাওয়া গেল সম্প্রতি, যেখানে এক দম্পতির মধ্যে বিবাদের মূল কারণ ছিল বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে জেদ।
যুক্তরাজ্যের একটি অনলাইন ফোরামে (Mumsnet.com) নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এক নারী।
ওই নারীর স্বামী তাদের পরিবারকে নিয়ে প্রতি বছরই ইউরোপ ভ্রমণে যান। সাধারণত, তারা বিভিন্ন দেশে “ইন্টাররেলিং” হলিডে কাটান, যেখানে ট্রেনের টিকিট ও বিভিন্ন শহরের হোটেলে থাকার খরচ থাকে।
তবে এবার তাদের বাড়ি সংস্কারের পরিকল্পনা চলছে, যার আনুমানিক খরচ প্রায় ৭৫ হাজার পাউন্ড। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের কারণে, ওই নারী তার স্বামীকে এই বছর বিদেশ ভ্রমণের পরিবর্তে দেশের ভেতরে কোনো ভ্রমণে যাওয়ার পরামর্শ দেন, যাতে কিছু অর্থ সাশ্রয় করা যায়।
কিন্তু স্বামীর জেদের কাছে হার মানতে হয় তাকে। তিনি জানান, তিনি নাকি অনেক বেশি কাজ করেন এবং একটি ভালো হলিডে তার প্রাপ্য।
এই নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এমনকি, তিনি তার সন্তানদেরও এই বিষয়ে জড়িয়ে নেন।
তিনি ছেলে-মেয়েদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা বাবার সঙ্গে বিদেশ যাবে, নাকি মায়ের সঙ্গে থাকবে।
এতে তার মেয়ে বাবার সঙ্গে যেতে রাজি হয়, তবে ছেলে মায়ের সঙ্গেই থাকতে চায়।
বিষয়টি এখানেই শেষ হয়নি। ওই নারীর অভিযোগ, তার স্বামী এখন সন্তানদের সামনে তাকে ছোট করছেন।
তিনি নাকি বোঝেন না কীভাবে টাকা খরচ করতে হয়, এবং তিনি স্বামীর মতো কঠোর পরিশ্রম করেন না— এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
এমনকি ছেলের অনিচ্ছা সত্ত্বেও, তার জন্য ভ্রমণের টিকিট বুক করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ওই নারী চরম হতাশায় ভুগছেন। তিনি জানান, তার ছেলে যেতে চাইছে না, যদি না তিনিও যান।
তিনি যদি যান, তবে তাদের আরও বেশি ঋণী হতে হবে। অন্যদিকে, তার স্বামী কোনোভাবেই একটি সস্তা হলিডের প্রস্তাব মানতে রাজি নন।
এই ঘটনার পর, অনলাইন ফোরামের অন্যান্য সদস্যরা ওই নারীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন এবং স্বামীর আচরণকে তীব্র নিন্দা করেছেন।
তাদের মতে, এই পরিস্থিতিতে স্বামীর এমন একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়াটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, একটি সুখী পরিবারের জন্য আর্থিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা এবং সবার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য।
বিশেষ করে, যখন বড় কোনো বিনিয়োগ বা ভ্রমণের পরিকল্পনা করা হয়, তখন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বোঝাপড়া ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
এতে করে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে, এবং ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
তথ্য সূত্র: অনলাইন ফোরাম থেকে প্রাপ্ত খবর।