যুদ্ধ আর জীবনের গল্প: ইরাকের ভয়াবহতা নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন মার্কিন নৌ-সেনা রায় মেন্ডোজা।
যুদ্ধ মানেই ধ্বংস, মৃত্যু আর বেঁচে থাকার কঠিন সংগ্রাম। ইরাক যুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলোর স্মৃতি নিয়ে সিনেমা তৈরি করেছেন মার্কিন নৌ-সেনা রায় মেন্ডোজা।
‘ওয়ারফেয়ার’ নামের এই সিনেমায় যুদ্ধের ভয়াবহতা, সৈন্যদের মানসিক যন্ত্রণা এবং বন্ধুত্বের গভীরতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাস্তবতার কাছাকাছি একটি চিত্র তুলে ধরার জন্য সিনেমাটি নির্মাণে কোনো প্রকার কাটছাঁট করা হয়নি।
রায় মেন্ডোজা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন নৌবাহিনীর বিশেষ বাহিনী ‘সিল’-এ কাজ করেছেন। এরপর তিনি হলিউডে সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন সিনেমায় বন্দুকযুদ্ধের দৃশ্য ডিজাইন করতেন।
অ্যালেক্স গারল্যান্ডের সিনেমা ‘সিভিল ওয়ার’-এর শুটিংয়েও তিনি যুক্ত ছিলেন। গারল্যান্ডের সঙ্গে মিলিত হয়েই মেন্ডোজা তৈরি করেছেন ‘ওয়ারফেয়ার’।
২০০৬ সালে ইরাকের রামাদি প্রদেশে একটি সেনা অভিযানে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমার চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়েছে। এই অভিযানে মেন্ডোজার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, স্নাইপার এবং চিকিৎসা সহায়তাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সেনা সদস্য গুরুতর আহত হন।
আল-কায়েদা জঙ্গিদের সঙ্গে সৈন্যদের তীব্র লড়াই হয়, যেখানে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তাদের।
সিনেমাটি তৈরির অভিজ্ঞতা নিয়ে মেন্ডোজা বলেন, অ্যালেক্স গারল্যান্ডের সঙ্গে কাজ করার সময়টা অনেকটা থেরাপির মতো ছিল। যুদ্ধের স্মৃতিগুলো নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি অনেক স্বস্তি অনুভব করেছেন।
বাস্তবতাকে ধরে রাখতে গিয়ে সিনেমাটিতে কোনো অতিরঞ্জন করা হয়নি। এমনকি শ্যুটিংয়ের সময় এমন কিছু দৃশ্য ছিল, যা মেন্ডোজাকে আবেগাপ্লুত করে তুলেছিল।
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন উইল পাউলার, যিনি সেনা কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়া, ডি’ফারাহ ওন-আ-টাই এবং কসমো জার্ভিস-এর অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে।
যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং সৈন্যদের মানসিক অবস্থা ফুটিয়ে তোলার জন্য সিনেমার শব্দ পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘ওয়ারফেয়ার’ সিনেমাটি যুদ্ধের আসল রূপ তুলে ধরে, যা দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলবে। এটি যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি সৈন্যদের আত্মত্যাগ, বন্ধুত্বের সম্পর্ক এবং মানসিক আঘাতের গল্প বলে।
সিনেমাটি যুদ্ধের ধারণা নিয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান