যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতির জেরে চীন থেকে আমদানি করা ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, এই বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে এবং চীন জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কারোই জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এই শুল্ক আরোপের মূল কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ। উভয় দেশই একে অপরের বাণিজ্য নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তুষ্ট। এর ফলস্বরূপ, বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা হচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। বিশেষ করে, ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হলে তা বিশ্বজুড়ে এই পণ্যের বাজারকে প্রভাবিত করবে।
বাংলাদেশের জন্য এই খবরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চীন থেকে বিপুল পরিমাণে ইলেক্ট্রনিক পণ্য আমদানি করা হয়। যদি শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে আমদানি খরচ বাড়বে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়বে দেশের বাজারে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দামে। ফলে, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলবে।
অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ীর জন্য সুযোগও সৃষ্টি হতে পারে। শুল্কের কারণে চীন থেকে পণ্য আমদানি কঠিন হয়ে পড়লে, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাজারে নিজেদের পণ্যের চাহিদা বাড়াতে সক্ষম হতে পারেন। এছাড়া, ইলেক্ট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারক দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে নতুন দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তবে, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে, সরকারকে দেশের বাণিজ্য নীতি আরও সুসংহত করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এছাড়া, দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে, যাতে আমদানি নির্ভরতা কমানো যায়।
মোটকথা, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা