মহাকাশে উড়ান দেবেন প্রথম ভিয়েতনামি নারী, সঙ্গী খ্যাতিমান নারীরা।
মহাকাশ জয়ের ইতিহাসে যুক্ত হতে চলেছে এক নতুন অধ্যায়। আগামী ১৪ই এপ্রিল, নারী মহাকাশচারী অ্যামান্ডা নুয়েন-এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রথম সম্পূর্ণ নারী মহাকাশ অভিযান। এই ঐতিহাসিক মিশনে সঙ্গী হিসেবে থাকছেন খ্যাতিমান কিছু নারী ব্যক্তিত্ব। অ্যামান্ডা নুয়েন একইসাথে একজন সমাজকর্মী এবং মহাকাশচারী হিসেবে পরিচিত।
এই অভিযানের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানের পঞ্চাশ বছর পূর্তি হতে চলেছে, আর ঠিক তার কাছাকাছি সময়েই প্রথম ভিয়েতনামি নারী হিসেবে অ্যামান্ডা নুয়েন মহাকাশে পা রাখতে চলেছেন। নুয়েন মনে করেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং ন্যায়বিচারের ধারণাগুলো কীভাবে বাস্তবে রূপ নিতে পারে।
তিনি বিশেষভাবে তরুণ ভিয়েতনামি নারীদের এবং সেইসব নারীদের অনুপ্রাণিত করতে চান, যারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা পেয়েছেন। নুয়েন বলেন, তিনি একা নন, বরং তাঁর এই যাত্রা তাঁর পুরো সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে।
ব্লু অরিজিন নামক একটি সংস্থার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই মিশনে আরো থাকছেন গেইল কিং, কেটি পেরি, লরেন সানচেজ, নাসা রকেট বিজ্ঞানী আয়েশা বাউই এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক কেরিয়ানে ফ্লিন। উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে সোভিয়েত নভোচারী ভ্যালেন্টিনা তেরেশকোভার একক মহাকাশ অভিযানের পর এই প্রথম কোনো সম্পূর্ণ নারী ক্রু-এর মহাকাশ যাত্রা হতে যাচ্ছে।
এই মিশনে অ্যামান্ডা নুয়েন দুটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন। এর মধ্যে একটি হলো, মহাকাশে মাইক্রোগ্র্যাভিটির মধ্যে নারীদের মাসিক ব্যবস্থাপনার ওপর গবেষণা করা। এছাড়াও, নুয়েন তাঁর সৌন্দর্যচর্চার সরঞ্জাম সাথে নিয়ে যাচ্ছেন, যার মধ্যে রয়েছে e.l.f. Cosmetics-এর প্রিয় কিছু পণ্য।
তিনি মনে করেন, ত্বকচর্চা শুধু সৌন্দর্য নয়, বরং স্বাস্থ্য রক্ষারও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অ্যামান্ডা নুয়েন ২০১৪ সালে ‘রাইজ’ নামে একটি অলাভজনক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, যা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারীদের সুরক্ষায় কাজ করে। তাঁর মতে, এই মহাকাশ অভিযান তাঁর এতদিনের কাজের একটি সফল পরিণতি।
এই অভিযানের মাধ্যমে, তিনি প্রমাণ করতে চান যে, একজন নারী হিসেবে নিজের পরিচয়ের সাথে আপোস না করেও যেকোনো প্রতিকূলতা জয় করা সম্ভব।
নুয়েন এর মতে, মহাকাশ যাত্রা নারীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তিনি বিশ্বাস করেন, নারীরা শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতেই নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
তাঁর এই অভিযান বাংলাদেশের নারীদেরও অনুপ্রেরণা যোগাবে, যারা বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল।