মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে, তাদের চাকরি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, আগামী এক বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বাড়তে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। এপ্রিল ২০২০-এর পর এই প্রথম বেকারত্ব নিয়ে এত বেশি অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
মার্চ মাসে করা এই জরিপে অংশ নেওয়া ৪৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, আগামী এক বছরে বেকারত্বের হার বাড়বে। এর পাশাপাশি, নিজেদের চাকরি হারানোর শঙ্কাও বাড়ছে, যা বেশ উদ্বেগের বিষয়।
জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ১৫.৭ শতাংশ মনে করেন, আগামী এক বছরের মধ্যে তাদের চাকরি চলে যেতে পারে। এই হারটি গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
যদিও এই উদ্বেগের বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার এখনো বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। গত চার বছরের বেশি সময় ধরে এখানে চাকরির সুযোগ বেড়েছে।
এর ফলে শক্তিশালী ভোগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও দেখা যাচ্ছে। তবে, মানুষের মধ্যে এই ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হলে, তা তাদের ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
এর ফলস্বরূপ ব্যবসায় বিনিয়োগে ভাটা পড়তে পারে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে একটা মন্দা দেখা যেতে পারে।
অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক-এর জরিপে মূল্যস্ফীতি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা মনে করছেন, নিকট ভবিষ্যতে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়তে পারে।
তাদের ধারণা, মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৩.৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এই হার গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
তবে, জরিপে দীর্ঘমেয়াদী মূল্যস্ফীতি নিয়ে তেমন উদ্বেগের চিত্র দেখা যায়নি। তিন বছর পর মূল্যস্ফীতি ৩ শতাংশ এবং পাঁচ বছর পর ২.৯ শতাংশে স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে। কারণ, মানুষের ধারণা যদি এমন হয় যে ভবিষ্যতে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, তবে তারা হয়তো এখনই বেশি খরচ করতে চাইবে অথবা বেশি বেতন দাবি করবে।
ফলে ব্যবসার খরচ বাড়বে এবং তার প্রভাব হিসেবে জিনিসপত্রের দামও বাড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন