1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
April 30, 2025 12:29 PM

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কান্না: ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতিতে ধ্বংসের মুখে!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Sunday, April 20, 2025,

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছোট ব্যবসার উপর শুল্কের খড়া: বাংলাদেশের জন্য কি শিক্ষা?

যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ এবং এর ফলে সৃষ্ট শুল্কের অস্থিরতা আমেরিকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরণের বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, যার মধ্যে রয়েছে আমদানি পণ্যের উচ্চ মূল্য, সরবরাহ শৃঙ্খলে বিশৃঙ্খলা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ( Small and Medium Enterprises – SME) -এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হতে পারে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ হিসেবে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ছোট ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

উদাহরণস্বরূপ, ক্যাথারিন বার্ক নামের একজন উদ্যোক্তা, যিনি স্ব-যত্ন বিষয়ক পণ্য তৈরি করেন, তার চীন থেকে আমদানি করা কাঁচামালের ওপর শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায় টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন।

প্রথমে তার পণ্যের উপর কোনো শুল্ক ছিল না, কিন্তু পরবর্তীতে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

মেলানি আব্রান্তেস, যিনি হস্তনির্মিত পণ্য ডিজাইন করেন, তিনি জানান, তার ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, যেমন – জাপানের কারিগরদের তৈরি সরঞ্জাম এবং পর্তুগাল থেকে আসা কর্কের (cork) দাম বেড়ে গেছে।

এই অপ্রত্যাশিত শুল্কের কারণে ব্যবসার পরিকল্পনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বেথ ফিনবো বেনিকের বেবি প্রোডাক্টস কোম্পানি ‘বিজি বেবি’-র অবস্থা আরও শোচনীয়। ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের মতো বড় দোকানে তাদের পণ্য সরবরাহ করার চুক্তি থাকলেও, শুল্কের কারণে তাদের একটি বড় চালান আটকে আছে।

যেখানে আগে তাদের পণ্য তৈরি করতে ১ লাখ ৫৮ হাজার ডলার খরচ হতো, এখন শুল্কের কারণে অতিরিক্ত ২ লাখ ২৯ হাজার ডলার যোগ হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, এই শুল্কের ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হতে পারে এবং অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে।

ছোট ব্যবসায়ীরা সাধারণত বড় ব্যবসায়ীদের মতো এই বাড়তি খরচ বহন করতে পারে না। তাদের মুনাফার মার্জিন কম থাকে এবং মূলধন সংগ্রহ করা কঠিন হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ছোট ব্যবসাগুলো প্রায় অর্ধেকের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শুল্কের কারণে এই ব্যবসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তা সামগ্রিক অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেবে। এর ফলস্বরূপ, বেকারত্ব বাড়বে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান কমবে।

এই পরিস্থিতিতে, অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য বিকল্প পথ খুঁজছেন। কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা ভাবছেন।

আবার কেউ সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিজ্ঞতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পও বিভিন্ন সময়ে শুল্ক এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়।

আমাদের ব্যবসায়ীরাও কাঁচামাল এবং অন্যান্য উপকরণের জন্য বিদেশি বাজারের উপর নির্ভরশীল।

এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার ঝুঁকি কমাতে এবং স্থিতিশীলতা বাড়াতে পারেন।

সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের উচিত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত নীতি গ্রহণ করা, যা তাদের টিকে থাকতে এবং উন্নতি করতে সহায়তা করবে।

এছাড়া, স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করার দিকেও নজর দেওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা এবং একইসাথে একটি সুযোগ।

আমাদের ব্যবসায়ীরা যদি সময় থাকতে তাদের ব্যবসার কৌশল পরিবর্তন করতে পারে এবং সরকারের সহায়তা পায়, তবে তারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT