চিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের বাজারে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাব এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। বিশেষ করে, যারা ভিনদেশি খাদ্যপণ্যের উপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য দুঃসংবাদ হলো, পছন্দের অনেক কিছুই হয়তো এখন আগের দামে পাওয়া যাবে না।
বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে, এবং সরবরাহ কমে যাওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যেকার এই বাণিজ্য যুদ্ধের মূল কারণ হলো শুল্ক বৃদ্ধি। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বাড়িয়েছে, এর প্রতিক্রিয়ায় চীনও একই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর ফলে, বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে, বিশেষ করে যেগুলো চীন থেকে আসে। এই পরিস্থিতিতে, শুধু আমেরিকাই নয়, বিশ্বজুড়ে অনেক দেশের ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আমেরিকার কুইন্সে অবস্থিত একটি চাইনিজ সুপারমার্কেট, চাং জিয়াং সুপারমার্কেট, এই সংকটের একটি উদাহরণ। সেখানকার ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, শুল্কের কারণে চীন থেকে তাদের পণ্য আমদানি করতে সমস্যা হচ্ছে।
আগে যে দামে পণ্য আসত, এখন তার থেকে অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তারা যদি অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে যান, তাহলে সেখানেও দাম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলস্বরূপ, তাদের দোকানে জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে হতে পারে।
এই ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি যোগসূত্র রয়েছে। বাংলাদেশের বাজারেও অনেক বিদেশি পণ্য আসে, যা আমদানি শুল্কের কারণে প্রভাবিত হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, ভোজ্য তেল, ডাল, বা ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করবে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই জটিল পরিস্থিতিতে, আমদানি-নির্ভর দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে স্বল্প আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কারণ তাদের আয়ের একটা বড় অংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে খরচ হয়।
বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে, তাদের জীবনযাত্রার মান আরও কমে যাবে। তাই, সরকারের উচিত হবে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করা।
চাং জিয়াং সুপারমার্কেটের ব্যবস্থাপকের মতো, অনেক ব্যবসায়ীই এখন উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা আশা করছেন, খুব দ্রুত এই বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান হবে, যাতে করে ভোক্তারা আগের মতোই তাদের পছন্দের পণ্যগুলো কিনতে পারেন।
প্রতিবেদনে প্রকাশ, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা প্রমাণ করে যে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশের নেওয়া নীতি অন্য দেশগুলোর অর্থনীতি ও জনগণের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
তাই, বাণিজ্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, যাতে করে কোনো দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তথ্য সূত্র: বিবিসি