যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী সম্পর্ক এবং বাণিজ্যিক সুবিধার কারণে একটি ভালো চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স বলেন, তাঁরা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং বর্তমান সরকারও সেই সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়।
উভয় দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক মিল রয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যিক সম্পর্কও বেশ ভালো। এই প্রেক্ষাপটে একটি ভালো বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে এমন আগ্রহের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভ্যান্স জানান, জার্মানির মতো দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সম্পর্ক একটু ভিন্ন। জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আগ্রহী হলেও, তাদের অভ্যন্তরীণ কিছু নীতি অনেক আমেরিকান ব্যবসার জন্য প্রতিকূল।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী রাচেল রিভস এই মাসের শেষে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বৈঠকে যোগ দেবেন। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
উল্লেখ্য, কয়েক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রীয় বাজারে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছিল, যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দেয়। যদিও পরে অনেক পণ্যের শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়।
চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আরোপিত ১৪৫ শতাংশ শুল্কও প্রত্যাহার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য আশা করছে, তারা এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে, যার ফলে তাদের এই শুল্ক থেকে অব্যাহতি মিলবে।
যুক্তরাষ্ট্র চায় ইউরোপ তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা নীতি আরো শক্তিশালী করুক। ভ্যান্সের মতে, একটি শক্তিশালী ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো, কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির ভুলগুলো, যেমন সুয়েজ সংকট বা ইরাক যুদ্ধের মতো ঘটনার সমালোচনা করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকান সংস্কৃতি ইউরোপীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে এই সম্ভাব্য চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলবে, সেদিকে এখন সবাই তাকিয়ে আছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান