যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন, বাড়ছে উত্তেজনা।
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নিচ্ছে। সম্প্রতি উভয় দেশই এক হাজার করে যুদ্ধবন্দীকে বিনিময় করেছে, যা এই তিন বছরের সংঘাতে বৃহত্তম বন্দী বিনিময়।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন। কিন্তু এর মধ্যেই কিয়েভের উপর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এ খবর জানিয়েছে।
গত কয়েকদিনে রাশিয়ার ছোড়া ৯২টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৯০০টির বেশি কামikaze ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনও রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে জার্মানি ইউক্রেনকে ১,০০০ কিলোমিটার পাল্লার টরাস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার কথা বিবেচনা করছে।
জার্মানির এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যদি পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন অব্যাহত রাখে, তাহলে রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা কমে যাবে।
একইসঙ্গে তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার আবেদন জানিয়েছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া আলোচনার টেবিলে বসতে আগ্রহী নয়, বরং তারা নতুন করে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করেছে।
তারা সুমি, খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চলের কয়েকটি জনপদ দখলের দাবি করেছে। এমনকি, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে একটি বাফার জোন তৈরির প্রস্তুতিও নিচ্ছে রাশিয়া।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনা করে বলেছেন, তার মধ্যে ‘কিছু একটা হয়েছে’।
তিনি পুতিনের পদক্ষেপকে ‘পুরোপুরি উন্মাদ’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী জানিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করেছে।
কিন্তু রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পোপ ফ্রান্সিস পরবর্তী আলোচনার জন্য ভ্যাটিকানকে প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া এতে রাজি নয়।
তারা ইস্তাম্বুলে আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়।
রাশিয়া এই সংঘাতের মূল কারণ হিসেবে কিছু বিষয়কে চিহ্নিত করেছে।
তাদের মতে, ইউক্রেনের সরকার রুশ ভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে এবং কিয়েভে একটি নতুন অর্থোডক্স চার্চ তৈরি করেছে, যা এই সংঘাতের কারণ।
তারা ইউক্রেনের বর্তমান সরকারকে অবৈধ বলেও মনে করে।
অন্যদিকে, পোল্যান্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে ন্যাটো এবং ইইউ-এর সদস্য হিসেবে দেখতে চায়।
কারণ হিসেবে তারা নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের কথা উল্লেখ করেছেন।
আন্তর্জাতিক চাপ ও আলোচনার পরেও যুদ্ধের পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ তৈরির খবর পাওয়া গেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা