হঠাৎ পাওয়া কিছু টাকা: কিভাবে সঠিক পথে ব্যবহার করবেন?

প্রায়ই শোনা যায়, অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু টাকা হাতে আসলে মানুষ দ্বিধায় পরে যায়, কিভাবে তা ব্যবহার করা যায়। এই বিষয়ে কিছু দরকারি পরামর্শ নিচে দেওয়া হলো, যা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

১. ঋণ পরিশোধ করুন:

যদি আপনার কোনো ঋণ থাকে, তবে সবার আগে চেষ্টা করুন সেটি পরিশোধ করার। বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ড অথবা ব্যক্তিগত ঋণের মতো উচ্চ সুদের ঋণ থাকলে, তা দ্রুত শোধ করা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, উচ্চ সুদের ঋণ আপনার আর্থিক বোঝা বাড়ায়।

এই ধরনের ঋণ পরিশোধ করে আপনি একদিকে যেমন মানসিক শান্তি পাবেন, তেমনি ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো সঞ্চয়ও করতে পারবেন।

২. জরুরি অবস্থার জন্য একটি তহবিল তৈরি করুন:

আর্থিক সুরক্ষার জন্য জরুরি অবস্থার একটি তহবিল তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই তহবিল আপনাকে অপ্রত্যাশিত খরচ বা কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সাহায্য করবে। সাধারণত, এই তহবিলে আপনার ৩ থেকে ৬ মাসের প্রয়োজনীয় খরচ যোগানোর মতো টাকা থাকা উচিত।

যদি আপনি স্ব-নিয়োজিত হন বা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হন, তবে এই তহবিলে ৬ থেকে ১২ মাসের খরচ রাখার চেষ্টা করুন। এতে চাকরি চলে গেলে বা ব্যবসায় মন্দা দেখা দিলে আপনার আর্থিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

৩. একাধিক লক্ষ্যে বিনিয়োগ করুন:

হাতে আসা এই অপ্রত্যাশিত অর্থ দিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরনের আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন। যেমন, কিছু অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করতে পারেন, আবার কিছু অংশ জরুরি তহবিলে জমা রাখতে পারেন।

এছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ের জন্য এই অর্থ কাজে লাগাতে পারেন।

৪. সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের সঠিক পথ বেছে নিন:

বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী, আপনি এই বিকল্পগুলো বেছে নিতে পারেন। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:

• সঞ্চয়পত্র: সরকারি সঞ্চয়পত্রগুলোতে বিনিয়োগ করা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
• ব্যাংক আমানত: বিভিন্ন ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট বা স্থায়ী আমানত হিসাবে টাকা জমা রাখতে পারেন।
• শেয়ার বাজার: শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভের সম্ভাবনা থাকে, তবে এতে ঝুঁকিও বেশি।
• বিও হিসাব: বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলে আপনি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন।

৫. প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনুন:

যদি আপনার কোনো জরুরি জিনিস কেনার প্রয়োজন হয়, যেমন— নতুন একটি ফ্রিজ অথবা আসবাবপত্র, তবে এই টাকা দিয়ে সেই প্রয়োজনীয়তা মেটাতে পারেন।

৬. বাজেট তৈরি করুন:

আপনার আর্থিক পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে জানার জন্য একটি বাজেট তৈরি করা দরকার। আপনার আয় ও ব্যয়ের হিসাব রাখুন। এর ফলে, আপনি জানতে পারবেন কোথায় কত টাকা খরচ করছেন এবং ভবিষ্যতে কিভাবে আরও ভালোভাবে পরিকল্পনা করতে পারবেন।

উপসংহার:

হঠাৎ পাওয়া এই অর্থকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে আপনি আপনার আর্থিক ভবিষ্যৎ আরও সুরক্ষিত করতে পারেন। মনে রাখবেন, প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়ার আগে আপনার আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: CNN