জাপানের মিয়াকোজিমায় নতুন বিলাসবহুল হোটেল: ওকিনাওয়ার সংস্কৃতি ও প্রকৃতির এক অপূর্ব মিশ্রণ।
জাপানের মিয়াকোজিমা দ্বীপে সম্প্রতি চালু হয়েছে অত্যাধুনিক একটি রিসোর্ট, রোজউড মিয়াকোজিমা। প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আর স্থানীয় সংস্কৃতির এক চমৎকার মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে। যারা একটু অন্যরকম ভ্রমণের স্বাদ নিতে চান, তাদের জন্য এই রিসোর্ট হতে পারে আদর্শ গন্তব্য।
জাপানের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার বিমানযাত্রার পর আপনি পৌঁছে যাবেন মিয়াকোজিমা দ্বীপে। ওকিনাওয়া অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এই দ্বীপটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং দীর্ঘায়ু মানুষের জন্য সুপরিচিত। এখানে জীবনযাত্রার এক বিশেষ ধারা অনুসরণ করা হয়, যা মানুষকে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন দিতে সহায়ক। এই দ্বীপকে ‘ব্লু জোন’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
রোজউড মিয়াকোজিমা-এর ডিজাইন ওকিনাওয়ার স্থানীয় সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলী, স্থানীয় কারুশিল্প এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখে রিসোর্টটি সাজানো হয়েছে। প্রতিটি ভিলা থেকে সমুদ্রের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। এখানকার ডিজাইন খুবইMinimalist, যা প্রশান্তি এনে দেয়।
রিসোর্টটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। বিলাসবহুল ভিলাগুলোতে স্থানীয় উপকরণ ও কারুশিল্পের ছোঁয়া রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে ব্যবহার করা হয়েছে মিয়াকো জোফু টেক্সটাইল, যা এখানকার ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রশিল্পের একটি উদাহরণ। তাছাড়া, স্থানীয় শিল্পী কিয়োজি মাতসুদার তৈরি সিরামিক শিল্পকর্মও রয়েছে, যা এই রিসোর্টের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। এখানে আসা পর্যটকদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। স্কুবা ডাইভিং, স্নোরকেলিং-এর মতো সমুদ্র-বিষয়ক কার্যকলাপের পাশাপাশি মার্শাল আর্ট ও ক্যালিগ্রাফি ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে।
রোজউড মিয়াকোজিমা-এর রেস্তোরাঁগুলোতে স্থানীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিবেশন করা হয়। এখানকার মেনুতে জাপানি ও ইতালীয় খাবারের পাশাপাশি ওকিনাওয়ার ঐতিহ্যবাহী নানা পদও উপভোগ করা যেতে পারে। তাছাড়া, ককটেল ও স্থানীয় পানীয়ের স্বাদ নিতে পারবেন বারগুলোতে।
এই রিসোর্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর পরিবেশ-বান্ধব ব্যবস্থাপনা। শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে খাদ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে রিসোর্টটি পরিবেশের সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
রোজউড মিয়াকোজিমা-তে এক রাতের জন্য খরচ প্রায় ১,৪০০ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৫৬,০০০ টাকার মতো। এটি একটি আনুমানিক হিসাব এবং বিনিময় হারের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে।
যারা প্রকৃতির কাছাকাছি, শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশে ছুটি কাটাতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য রোজউড মিয়াকোজিমা একটি অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে।
তথ্য সূত্র: Travel and Leisure