আজকাল কোমর ব্যথায় (lower back pain) ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এর কারণ হতে পারে একটানা বসে কাজ করা, ভারী জিনিস তোলা, কিংবা আঘাত পাওয়া। তবে, অনেক সময় এই ব্যথার মূল কারণ খুঁজে পাওয়া যায় আমাদের শরীরের গভীরে, মেরুদণ্ডের কাছাকাছি থাকা একটি বিশেষ পেশিতে – যা হলো ‘পসোয়াস’ (Psoas) পেশী।
পসোয়াস পেশী আসলে কী? আমাদের কোমর থেকে পায়ের উপরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি শক্তিশালী পেশী হলো পসোয়াস। এটি মেরুদণ্ড, শ্রোণীচক্র (pelvis) এবং পায়ের সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এই পেশী আমাদের শরীরকে সোজা রাখতে, হাঁটাচলা করতে এবং এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সাহায্য করে।
কোমর ব্যথার সঙ্গে পসোয়াসের সম্পর্ক: দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করলে বা শারীরিক কার্যকলাপ কম হলে এই পেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে অথবা শক্ত হয়ে যেতে পারে। এর ফলে কোমর, নিতম্ব এবং পায়ের সংযোগস্থলে ব্যথা হতে পারে।
অনেক সময় ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। দিনের পর দিন এই সমস্যা চলতে থাকলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
পসোয়াস সমস্যার লক্ষণগুলো:
করণীয়: কোমর ব্যথা কমাতে কিছু সহজ ব্যায়াম ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
১. হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং: নিয়মিত হালকা স্ট্রেচিং (stretching) করুন। যেমন – হিপ ফ্লেক্সর স্ট্রেচ, কোমর ঘোরানো, এবং ক্যাট-কাউ পোজ (cat/cow pose)। এই ব্যায়ামগুলো পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে।
যোগাভ্যাস করুন।
২. সঠিক ভঙ্গি (Posture): বসার ভঙ্গি উন্নত করুন। কোমর সামান্য বাঁকানো অবস্থায় বসুন এবং মেরুদণ্ড সোজা রাখুন।
একটানা বসে থাকার পরিবর্তে, মাঝে মাঝে উঠে হাঁটাচলা করুন। অতিরিক্ত ঝুঁকে বা নিচু হয়ে কাজ করা এড়িয়ে চলুন।
৩. পেশীকে শক্তিশালী করা: সিটেড লেগ লিফট (seated leg lifts), স্ট্যান্ডিং মার্চেস (standing marches), এবং ফ্ল্যাটার কিকস (flutter kicks) এর মতো ব্যায়ামগুলো করতে পারেন। প্রয়োজনে হালকা ওজনের ডাম্বেল ব্যবহার করুন।
স্কোয়াট (squats) ও ডেডলিফ্ট (deadlifts) এর মতো ব্যায়াম কোমর ও আশেপাশের মাংসপেশীকে শক্তিশালী করে।
৪. জীবনযাত্রায় পরিবর্তন: ঘুমের সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন। চিৎ হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে হাঁটুর নিচে বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।
কোমর ব্যথার সমস্যা হলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
মনে রাখবেন, কোমর ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক জীবনযাত্রা আপনাকে এই সমস্যা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক