চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের জের, বোয়িং বিমান সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিল চীন।
চীন সরকার তাদের এয়ারলাইন্সগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোয়িং বিমান সরবরাহ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসেবেই চীন এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পক্ষ থেকে এয়ারলাইন্সগুলোকে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বিমানের যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম কেনা বন্ধ করতেও বলা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যের ওপর চীন সরকার ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কয়েক দিন পরই এই নির্দেশ আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন সরকারও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক বসিয়েছে। বোয়িং থেকে বিমান লিজ নেওয়া এয়ারলাইন্সগুলোর সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়ে চীন সরকার কিভাবে তাদের সহায়তা করতে পারে, সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে।
বর্তমানে চীনের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রায় ১০টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান প্রস্তুত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, চীন সরকারের নতুন শুল্ক নীতি কার্যকর হওয়ার আগে যদি এই বিমানগুলোর কাগজপত্র ও অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যায়, তাহলে হয়তো সেগুলোকে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বোয়িং এবং অন্যান্য মার্কিন প্রস্তুতকারকদের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে, যারা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে, বাজেট এয়ারলাইন্স রায়ানএয়ারের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ও’লিয়ারি জানিয়েছেন, বোয়িং বিমানের দাম বাড়লে তার কোম্পানি সরবরাহ নিতে দেরি করতে পারে। তিনি জানান, রায়ানএয়ারের আগস্ট মাস থেকে আরও ২৫টি বিমান পাওয়ার কথা ছিল, তবে সম্ভবত তারা সেগুলোর সরবরাহ ২০২৬ সালের মার্চ বা এপ্রিল মাস পর্যন্ত পিছিয়ে দিতে পারে।
শেয়ার বাজারেও এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। বোয়িংয়ের শেয়ারের দাম কমেছে, সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির প্রকৌশল খাতে কম বিনিয়োগের অভিযোগ করেছেন। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বোয়িংয়ের শেয়ারের দর ৭ শতাংশ কমেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বিরোধের কারণে বিশ্বজুড়ে সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে আমদানি খরচ এবং কিছু পণ্যের সহজলভ্যতার ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ দুই দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের বাজারেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান