প্যারিসে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করাই ছিল বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
তবে, আসন্ন ইস্টার উৎসবের আগেই যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলা বেড়েছে।
বৈঠকে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক দূত স্টিভ উইটকফ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা কমে আসার প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়। যেখানে ২০১৪ সালে রাশিয়া কর্তৃক অধিকৃত ক্রিমিয়া এবং ২০২২ সালে রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি স্থাপনের চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। বরং, রাশিয়ার আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে।
এমনকি, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ করার পরেও কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া জানায়, তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে, তারা এই চুক্তি মানবে না।
ইউক্রেনের একটি থিংক ট্যাংক, সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিসইনফরমেশন, জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও রাশিয়ার আগ্রাসনে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরবর্তী ২২ দিনে, আগের একই সময়ের তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বেশি ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনও রাশিয়ার প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে, রাশিয়াকে থামানোর জন্য কোনো সময়সীমা বা কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা তারা জানায়নি।
বৈঠকে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা, রাশিয়ার সঙ্গে সুর মিলিয়ে উইটকফ এমন কিছু বিষয় উপস্থাপন করছেন যা রাশিয়ার পক্ষকে আরও বেশি সমর্থন জোগায়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায়, এই বৈঠকের ফলাফল এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে, রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধে এটি কতটা কার্যকর হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন