শিরোনাম: তিউনিসিয়ায় বিরোধী নেতাদের কারাদণ্ড, কর্তৃত্ববাদের অভিযোগ
তিউনিসিয়ায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অভিযোগে দেশটির কয়েক ডজন বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে দীর্ঘ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সূত্রে এই খবর জানা গেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির সাবেক এক বিচারপতি, কয়েকজন কূটনীতিক এবং আরো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা। বিরোধীদের দাবি, এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এগুলো প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদের স্বৈরাচারী শাসনের বহিঃপ্রকাশ।
সংবাদ সংস্থা টিএপি’র বরাত দিয়ে জানা যায়, আদালতের রায়ে অভিযুক্তদের ১৩ বছর থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে, ঠিক কতজন এই বিচারের আওতায় এসেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। সন্ত্রাস দমন বিভাগের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা যায়, অভিযুক্তদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিরোধী ষড়যন্ত্র এবং একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে সাইদের ক্ষমতাকে দুর্বল করারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। আইনজীবীরা বলছেন, বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল না। এমনকি শুনানির আগেই অভিযুক্তদের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের পরিচালক বাসাম খাজা আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রেসিডেন্ট সাইদ তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দমন করতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছেন।
জানা গেছে, এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দল ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্টের সদস্য ইসাম চেবি, যিনি বর্তমানে কারাগারে বন্দী। এছাড়াও, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান কামেল গুইজানি এবং কয়েকজন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বও এই মামলার আসামি। তাদের বিরুদ্ধে দেশটির স্থিতিশীলতা নষ্ট এবং সাইদকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা স্বৈরাচারী শাসনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি এর আগে অভিযুক্ত রাজনীতিবিদদের ‘বিশ্বাসঘাতক ও সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। বিরোধী নেতারা বলছেন, তাদের কণ্ঠরোধ করতেই এই সাজা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে ‘অভ্যুত্থান’-এর অভিযোগও এনেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও দেশটির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। বিরোধী দল ‘এন্নাহদা’র প্রধান রাশিদ ঘানুচিকে গত বছর এপ্রিল মাসে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে আরও ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা