যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জেবি প্রিটজকার, ডেমোক্রেটিক পার্টির অভ্যন্তরে এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কিভাবে রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আসন্ন ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে তার অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
সম্প্রতি নিউ হ্যাম্পশায়ারে এক বক্তৃতায় প্রিটজকার তার দলের দুর্বলতা এবং ট্রাম্পের প্রতি নরম মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করেন। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পরে।
প্রিটজকারের উত্থান মূলত একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে, যিনি হাইয়াত হোটেল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী। বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হওয়ায় তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ একজন ফান্ডার হিসেবে পরিচিত।
তার এই আর্থিক সামর্থ্য তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতি সমর্থন যোগাতে সাহায্য করে। খবর অনুযায়ী, তিনি ব্যক্তিগতভাবে উইসকনসিন ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যানকে ডেকে সেখানকার নির্বাচনী প্রচারণার দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং কিভাবে তা সমাধান করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দেন।
এছাড়া, তিনি বিভিন্ন কর্পোরেট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি নমনীয় মনোভাবের কারণে ভবিষ্যতে কিভাবে সমালোচিত হতে পারেন সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রিটজকারের এই ধরনের পদক্ষেপগুলো ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। যদিও তিনি সরাসরি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার ঘনিষ্ঠ মহলের অনেকেই মনে করেন তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
নিজের বক্তৃতায় প্রিটজকার রিপাবলিকান পার্টির কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্পের সঙ্গে নাৎসিবাদের উত্থানের তুলনা করেছেন, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রিটজকার মনে করেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তিনি ডেমোক্রেটদের মধ্যে “ভীরুতা” ও “আত্মসমর্পণের” মানসিকতার সমালোচনা করে তাদের আরও শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তার এই মনোভাব অনেক রাজনৈতিক কর্মীর মধ্যে উৎসাহ যোগাচ্ছে।
তবে, প্রিটজকারের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার বিপুল অর্থ এবং প্রভাবশালী অবস্থানের সমালোচনা করছেন। তাদের মতে, একজন বিলিয়নিয়ার হয়েও তিনি কিভাবে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত হবেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
সমালোচকদের মতে, প্রিটজকারের এই বিপুল অর্থ এবং ক্ষমতা তাকে এক বিশেষ সুবিধা দেয়, যা অনেক সময় সাধারণ মানুষের থেকে তাকে দূরে সরিয়ে দেয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, প্রিটজকারের এই ধরনের পদক্ষেপ আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। তার এই উত্থান একদিকে যেমন ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে নতুন উদ্যম সৃষ্টি করবে, তেমনই রিপাবলিকানদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেও দেখা দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন