যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থা, যা গ্রাহকদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে, সেটি দুর্বল করার অভিযোগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। খবরটি জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
জানা গেছে, কংগ্রেসের একটি তদারকি সংস্থা, যা সরকারি কার্যক্রমের ওপর নজর রাখে, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সময়কালে ‘কনজিউমার ফাইনান্সিয়াল প্রোটেকশন ব্যুরো’ (সিএফপিবি)-কে দুর্বল করার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। সিনেটের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও এই বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন এবং ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত পরিচালককে তাদের দায়িত্ব পালনে কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলেছেন।
সিএফপিবি-কে মূলত ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর, ২০১০ সালে কংগ্রেস তৈরি করেছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, আর্থিক খাতে গ্রাহকদের সঙ্গে হওয়া কোনো প্রতারণা বা অন্যায্য আচরণের বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য করা এবং আর্থিক পরিষেবা শিল্পকে তদারকি করা। রিপাবলিকানরা দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্যুরোর কার্যক্রম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, সিএফপিবি তাদের দেওয়া দায়িত্বের বাইরে কাজ করছে এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার কাজের পুনরাবৃত্তি করছে।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারের সময় এই সংস্থাটিকে দুর্বল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বর্তমানে, ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের কারণে এই ব্যুরোর কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, মাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, যিনি সিএফপিবি-র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন, এবং নিউ জার্সির সিনেটর অ্যান্ডি কিম, দুজনেই সরকারি হিসাবরক্ষণ কার্যালয়কে (ইউএস গভর্নমেন্ট একাউন্টিবিলিটি অফিস – জিএও) এই বিষয়ে তদন্তের জন্য অনুরোধ করেছেন।
সিএনএন-এর হাতে আসা একটি চিঠিতে জানা গেছে, জিএও এই বিষয়ে তাদের পর্যালোচনা শুরু করেছে। একই সময়ে, ৪০ জন ডেমোক্র্যাট সিনেটর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রুস ভটের কাছে জানতে চেয়েছেন, কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনার কারণে কংগ্রেস কর্তৃক নির্ধারিত ৮০টির বেশি কাজ কীভাবে সম্পন্ন করা হবে।
সিনেটররা এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, “সংস্থাটিতে কর্মী সংখ্যা ৯০ শতাংশ কমানোর পর মাত্র ২০০ জন কর্মী দিয়ে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।”
আদালতও এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। ফেডারেল আদালত কর্মীদের ছাঁটাইয়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে বিস্তারিত শুনানির পরেই কোনো সিদ্ধান্ত জানাবে।
আগামী ১৬ মে এই বিষয়ে আপিল আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে কর্মীদের ব্যাপক হারে ছাঁটাইয়ের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন