বহু বছর আগে সমুদ্রে পাঠানো একটি বার্তা, যা হয়তো কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছিল, অবশেষে ফিরে এল তার সৃষ্টিকর্তার কাছে। ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকাতে, যেখানে ১৯৭৬ সালে ১৪ বছর বয়সী পিটার আর থম্পসন নামের এক কিশোর একটি বোতলে করে বার্তা পাঠিয়েছিলেন, যা প্রায় অর্ধশতাব্দী পর বাহামাসে খুঁজে পাওয়া যায়।
ক্যারিবীয় সাগরে ছুটি কাটাতে যাওয়া দুই ভাই, ক্লিন্ট এবং ইভান বাফিংটন, একটি কাঁচের বোতলের ভেতর খুঁজে পান সেই বার্তাটি। কৌতূহলী হয়ে তাঁরা জানতে চান, কে লিখেছিল এই বার্তা, আর কোথায়ই বা পাঠানো হয়েছিল সেটি।
বোতলের ভেতরে থাকা বার্তায় লেখা ছিল, পিটার আর থম্পসন নামের এক কিশোর, যিনি ম্যাসাচুসেটস-এর একটি স্কুল, পেনটকেট রিজিওনাল জুনিয়র হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন, তিনি সমুদ্রবিদ্যা বিষয়ক একটি পরীক্ষার অংশ হিসেবে এটি তৈরি করেন। তিনি খুঁজে পাওয়া ব্যক্তিকে তাঁর কাছে ফেরত পাঠাতে বলেছিলেন, কোথায় পাওয়া গেছে, দিন-তারিখ এবং কীভাবে পাওয়া গেছে, সেই বিবরণসহ।
ভাইদের অনুসন্ধানে সাহায্য করেন বোস্টনের একজন সাংবাদিক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য উপায়ে তাঁরা খুঁজে বের করেন পিটার থম্পসনকে, যিনি বর্তমানে ম্যাসাচুসেটস-এর লিওমিনস্টার-এ বসবাস করেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের কথা, নিজের হাতে লেখা বার্তাটি ফিরে পাওয়ার খবরে তিনি যেমন বিস্মিত, তেমনই আনন্দিত।
ক্লিন্ট বাফিংটন, যিনি নিজেও পুরনো দিনের বার্তা সংগ্রহ করেন, এই ঘটনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, “একটি সাধারণ বার্তা, যেখানে কোনো প্রেম বা গুপ্তধনের ইঙ্গিত ছিল না। কিন্তু ১৯৭০-এর দশকে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরের কাছে এর গুরুত্ব কতখানি ছিল, তা ভাবা যায়!
কোথায় এটি যাবে, কারা এটি খুঁজে পাবে, এই সব স্বপ্ন ছিল তার।” তিনি আরও যোগ করেন, “উত্তর আটলান্টিকের বিশাল সমুদ্রে কত শত ঝড়, তিমি বা বাণিজ্যিক জাহাজের পাশ কাটিয়ে, অবশেষে এটি বাহামাসের একটি নির্জন দ্বীপে এসে ঠেকেছিল।
আর এই দীর্ঘ সময়ে, এই বার্তাটি যেন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।”
এই ঘটনার মাধ্যমে যেন সময়কে জয় করে ফিরে আসা এক টুকরো স্মৃতি, যা আজও মানুষের মনে গভীর দাগ কাটে।
তথ্য সূত্র: পিপল