যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম ছিল অত্যন্ত দ্রুতগতির এবং বিতর্কিত। জানুয়ারিতে দীর্ঘতম উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, হাতে খুব বেশি সময় নেই।
দ্রুত পরিবর্তনের অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি, কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের পাশাপাশি এসেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সম্প্রতি এক জরিপে তার জনপ্রিয়তার হার ছিল ৪১ শতাংশ, যা অতীতের যে কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম ১০০ দিনের তুলনায় সর্বনিম্ন।
ক্ষমতায় আসার পর দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্প তার আগের মেয়াদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। বিভিন্ন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, ফেডারেল কর্মী এবং অভিবাসন নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন, যা অনেক সমালোচকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
যদিও কিছু ক্ষেত্রে, যেমন- অভিবাসন প্রত্যাবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার দল প্রত্যাশিত গতিতে কাজ করতে পারেনি বলে জানা যায়।
ট্রাম্পের উপদেষ্টারা মনে করেন, দ্রুত পরিবর্তন আনার জন্য তার হাতে খুব বেশি সময় নেই। ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে নীতিগত বিষয়গুলো দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা দ্রুত সমাধানে বাধা সৃষ্টি করছে।
হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমেও এসেছে পরিবর্তন। কর্মকর্তাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এবং মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে, যা তার আগের মেয়াদের কথা মনে করিয়ে দেয়।
গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা, যেমন- স্টিফেন মিলার ব্যাপক পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছেন, যদিও এর অনেক কিছুই আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
এছাড়া, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক-এর সরকারি সংস্থাগুলোতে কাটছাঁটের পরিকল্পনা নিয়ে কিছু ক্যাবিনেট সদস্য অসন্তুষ্ট।
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্পের মনোযোগ বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। তিনি বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে চাইছেন।
তবে, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে তিনি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর ট্রাম্পের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আসতে পারে।
কারণ, নির্বাচনের পর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আলোচনা শুরু হয়ে যাবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ১০০ দিনের মধ্যে জনমত জরিপের ফল তাদের উদ্বেগের কারণ নয়। তারা তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে মনোযোগী থাকবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন