**পাহাড় পথের যাত্রী: আল্পস-এর পথে তারকাদের যাত্রা**
সম্প্রতি বিবিসি (BBC)-এর একটি নতুন প্রামাণ্যচিত্র ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যার নাম ‘পিলগ্রিমেজ: দ্য রোড থ্রু দ্য আল্পস’। এই সিরিজে সাত জন সেলিব্রিটি, যাদের কারো ধর্ম আছে, কারো বা নেই, তাঁরা অস্ট্রিয়ান ক্যামিনো পথে হেঁটেছেন।
এটি মধ্যযুগীয় ক্যাথলিকদের ব্যবহৃত একটি পথ, যা অস্ট্রিয়া থেকে শুরু হয়ে সুইস আল্পস-এর পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়েছে। প্রায় ১৯০ মাইল দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দেওয়ার সময় সেলিব্রিটিরা নিজেদের সম্পর্কে, ধর্ম সম্পর্কে এবং এই দীর্ঘ যাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন।
এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন গায়ক জে ম্যাকগুইনেস, যিনি একসময় ক্যাথলিক ছিলেন, তবে বর্তমানে নিজেকে একজন অজ্ঞেয়বাদী (Agnostic) হিসেবে পরিচয় দেন। এছাড়াও রয়েছেন প্রাক্তন সেনা সদস্য হ্যারি ক্লার্ক, যিনি এখনো ক্যাথলিক ধর্ম পালন করেন।
কমেডিয়ান হেলেন লেডেরার তাঁর পিতার ইহুদি ঐতিহ্য এবং পরিবারের গভীর দুঃখ নিয়ে কথা বলেছেন। প্যারালিম্পিয়ান স্টেফানি রিড তাঁর জীবনের এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর কিভাবে খ্রিষ্টান ধর্মকে আঁকড়ে ধরেছিলেন, সেই গল্প বলেছেন।
কমেডিয়ান ডালিসো চাপোন্ডা বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন এবং তাঁর নিজের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিক নেলুফার হেদায়েত-এর পরিবার আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে এসেছিল।
ইসলাম ধর্ম এবং এর সংস্কৃতি নিয়ে তাঁর মনে যে রাগ, সেই বিষয়ে তিনি আলোচনা করেছেন।
অনুষ্ঠানটি দেখতে বসে মনে হতে পারে, এটি হয়তো একঘেয়ে একটি অনুষ্ঠান হতে চলেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি দর্শকদের মন জয় করে নেয়।
অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের গল্পগুলো বলেছেন, যা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই যাত্রাপথে তাঁরা বিভিন্ন মঠ ও আশ্রমে গিয়েছেন, সেখানকার সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন।
এই অনুষ্ঠানে কোনো কৃত্রিম দ্বন্দ্ব তৈরি করা হয়নি। বরং, এটি ছিল পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আত্ম-অনুসন্ধানের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত।
এই প্রামাণ্যচিত্রটিতে দেখা যায়, সেলিব্রিটিরা তাঁদের ব্যক্তিগত বিশ্বাস, শোক, এবং জীবনের নানা উত্থান-পতন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করছেন। এই আলোচনাগুলি দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।
তাঁদের এই যাত্রা কেবল একটি ভৌগোলিক পথ অতিক্রম করা নয়, বরং এটি ছিল আত্ম-উপলব্ধির এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
আল্পস-এর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, যা এই প্রামাণ্যচিত্রটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। যারা ভ্রমণের মাধ্যমে নতুন কিছু জানতে ও শিখতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য এই অনুষ্ঠানটি একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian