সকাল শুরু করার জন্য ৬ ঘণ্টার রুটিন? এত সময় নেই? চিন্তা নেই! দিনের শুরুটা ভালো করতে কিছু সহজ অভ্যাসের চেষ্টা করুন।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজকাল দীর্ঘ, জটিল সকালের রুটিনের ছবি প্রায়ই দেখা যায়। কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়তো ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করা থেকে শুরু করে সাঁতার কাটেন, ধ্যান করেন, জার্নাল লেখেন, কলা দিয়ে মুখ ঘষেন, ব্যায়াম করেন, বরফ জলে মুখ ডুবিয়ে ৯:৩০ এর মধ্যে প্রাতঃরাশ সেরে ফেলেন! এমন ৬ ঘণ্টার রুটিন অনেকের কাছেই হয়তো বিস্ময়কর।
কিন্তু সবার পক্ষে কি এত সময় হাতে নিয়ে সকাল শুরু করা সম্ভব? হয়তো না। তবে দিনের শুরুটা কিভাবে করছেন, সে বিষয়ে নতুন করে ভাবা দরকার। কারণ, একটি সুশৃঙ্খল সকাল আপনার শক্তি ও মেজাজের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনটাই বলছেন ইংল্যান্ডের চেশায়ারের মনোচিকিৎসক কামালিন কৌর।
তার মতে, দিনের শুরুটা ভালো হলে সারাদিন ভালো কাটে, মনে হয় সবকিছু গোছানো।
কর্মক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক শন ম্যাকলিন বলছেন, প্রতিদিন একই কাজ একই সময়ে করাটা খুবই জরুরি। এতে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে। কারণ, মানুষের মস্তিষ্ক সীমিত এবং এটি উচ্চ-স্তরের চিন্তাভাবনার জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখে।
তাই রুটিন তৈরি করা এক ধরনের মানসিক শর্টকাট। ম্যাকলিনের গবেষণা বলছে, সকালে যারা নিয়ম মেনে কাজ করেন, দিনের শেষে তাদের মানসিক অবসাদ কম হয়।
তাহলে, একটি ভালো সকালের রুটিন কেমন হওয়া উচিত?
আসলে, ভালো রুটিনের কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। এটা ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন হতে পারে। তাড়াহুড়ো করে ঘুম থেকে ওঠা, স্নান করা, খাওয়া এবং অফিসের জন্য দৌড়ানো – এগুলো ভালো সকালের রুটিন হতে পারে না। কারণ, সকালে তাড়াহুড়ো করলে শরীরে অতিরিক্ত কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা মানসিক অস্থিরতা তৈরি করে।
তাহলে শুরুটা করবেন কীভাবে?
যদি সকালে আপনার হাতে খুব বেশি সময় না থাকে, তাহলে ঘুম থেকে ওঠার ৩০ মিনিট আগে অ্যালার্ম সেট করতে পারেন। আর ঘুম থেকে উঠেই ‘সnooze’ বোতামে চাপ দেওয়া এড়িয়ে চলুন। এরপর বিছানা গুছিয়ে ফেলুন।
গবেষণায় দেখা গেছে, অগোছালো পরিবেশ উদ্বেগ বাড়ায়। সকালে একটি কাজ সম্পন্ন করলে ভালো লাগা বাড়ে, যা ডোপামিন হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে।
এরপর এক গ্লাস জল পান করুন। রাতে দীর্ঘ সময় ধরে জল পান না করার কারণে শরীরে জলের অভাব হতে পারে। ক্যাফিন গ্রহণের পরিবর্তে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং সকালের প্রথম ঘণ্টায় সূর্যের আলোয় যান।
সম্ভব হলে, কিছুক্ষণ বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করুন বা খোলা জায়গায় যান। দিনের আলো সার্কেডিয়ান রিদমকে প্রভাবিত করে, যা সকালে আমাদের সজাগ রাখতে সাহায্য করে।
ছোট্ট কিছু অভ্যাস, যা আপনার সকালের শুরুটা সুন্দর করে তুলতে পারে। এগুলো আপনার সারাদিনের কাজ করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস