ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ১০০ দিনের চিত্র: প্রতিশোধ ও প্রতিরোধের লড়াই।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যেন প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়েছেন। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের শায়েস্তা করতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।
ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনে তার এই প্রতিহিংসাপরায়ণতা এবং এর বিপরীতে ওঠা প্রতিরোধের ঢেউ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
লস অ্যাঞ্জেলেস সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন।
তাদের স্লোগান আর প্ল্যাকার্ডে ট্রাম্পের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় মেয়াদের শাসনকালে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। তিনি বিভিন্ন সময় তার সমালোচক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করছেন।
এর মধ্যে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট রাজনীতিবিদ, যারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এমনকি তার নিজের দলেরও কিছু সদস্য রয়েছেন। এছাড়াও, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার ঘোষণা দেন।
ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে, তিনি তার বিরোধীদের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা সীমিত করার চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের কারণে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিভাজন আরও বেড়েছে। তার সমর্থকরা তাকে সমর্থন জানালেও, বিরোধীরা মনে করছেন তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এবং প্রতিশোধ নিচ্ছেন।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ট্রাম্পের নীতি নিয়ে বিতর্ক চলছে। তিনি বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন এনেছেন এবং শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
তবে, তার এই পদক্ষেপের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এবং অনেক আমেরিকান মনে করছেন দেশের আর্থিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক-এর চেয়ারম্যানের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না।
ট্রাম্প মনে করেন, ব্যাংক সুদহারের পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ট্রাম্পের বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও আইনি কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।
এই পরিবর্তনগুলো হয়তো দ্রুত হবে, নয়তো ধীরে ধীরে; কিন্তু এর ফলস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা নিয়ে অনেকের মনেই গভীর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন