চীন ও আমেরিকার মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে মুখ খুলেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেছেন, এই দুই দেশের মধ্যে শুল্ক আরোপের ফলে সকল দেশের ‘বৈধ অধিকার’ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বুধবার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শি জিনপিংয়ের মতে, বাণিজ্য যুদ্ধ ‘সব দেশের বৈধ অধিকার ও স্বার্থ’ ক্ষুণ্ণ করে এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, চীন জাতিসংঘের অধীনে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আজারবাইজানের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। এর মাধ্যমে উভয় দেশের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কার্যত বাণিজ্য অচলাবস্থা চলছে। উভয় দেশই একে অপরের পণ্যের উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র চীনের অধিকাংশ পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, যার জবাবে চীনও মার্কিন রফতানির উপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার তারা জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশ থেকে কমে ২.৮ শতাংশ হতে পারে।
তবে, মার্কিন কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের পর ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বক্তৃতায় মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ ‘টেকসই নয়’ এবং তিনি আশা করেন উভয় পক্ষ বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাবে।
এরপর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক ‘খুব বেশি’ উল্লেখ করে জানান, সময়মতো এই শুল্কের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হবে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি স্থিতিশীল বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা বাংলাদেশের রফতানি ও রেমিটেন্সের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে তা দেশের অর্থনীতিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা