1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 27, 2025 4:11 PM

আশ্চর্য! শেক্সপিয়ারের সম্পর্ক নিয়ে নতুন আলো, স্ত্রীকে নিয়ে লন্ডনে ছিলেন?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Wednesday, April 23, 2025,

শেক্সপিয়ারের দাম্পত্য জীবন নিয়ে নতুন তথ্য, স্ত্রীর সঙ্গে লন্ডনে ছিলেন কবি?

বহুদিন ধরেই ধারণা করা হতো যে বিখ্যাত নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী অ্যান হাথাওয়ের সম্পর্ক খুব একটা সুখের ছিল না। শেক্সপিয়ার তাঁর কর্মজীবনের জন্য লন্ডনে চলে যান এবং স্ত্রীকে স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-অ্যাভনে (Stratford-upon-Avon) রেখে যান। এমনকি তাঁর উইল-এ তিনি স্ত্রীর জন্য তাঁর “দ্বিতীয় সেরা খাট”-টি রেখে গিয়েছিলেন, যা হয়তো দাম্পত্য সম্পর্কের শীতলতার ইঙ্গিত দেয়।

কিন্তু সম্প্রতি, শেক্সপিয়ারের জীবনের ওপর গবেষণা করা একদল বিশেষজ্ঞ সপ্তদশ শতকের একটি চিঠির অংশ বিশ্লেষণ করে তাঁদের সম্পর্কে নতুন আলোকপাত করেছেন। তাঁদের ধারণা, এতদিন পর্যন্ত যে ধারণা প্রচলিত ছিল, সেই ধারণা সম্ভবত ভুল। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Bristol) আধুনিক ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ম্যাথিউ স্টেগল (Matthew Steggle)-এর মতে, চিঠির ওই অংশে শেক্সপিয়ার এবং তাঁর স্ত্রীকে লন্ডনের ট্রিটি লেনে (Trinity Lane) একসঙ্গে থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। বর্তমানে এলাকাটি লিটল ট্রিটি লেন (Little Trinity Lane) নামে পরিচিত।

চিঠিটিতে আরও জানা যায়, শেক্সপিয়ার জন বাটস নামের এক অনাথের জন্য রাখা কিছু অর্থের ব্যাপারেও জড়িত ছিলেন। “গুড মিসেস শেক্সপিয়ারের” (Good Mrs Shakspaire) উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিটিতে মিঃ বাটস ও তাঁর পুত্র জন-এর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, জন-এর মা মিসেস বাটস, তাঁর সন্তানদের জন্য কিছু অর্থ “মিঃ শেক্সপিয়ারের” কাছে জমা রাখতে বলেছিলেন, যা তাঁরা সাবালক হলে পাওয়ার কথা ছিল।

অধ্যাপক স্টেগল বলেন, “চিঠি লেখক মনে করেন মিসেস শেক্সপিয়ারের কাছে অর্থের স্বাধীনতা ছিল। তাঁরা আশা করেছিলেন মিসেস শেক্সপিয়ার নিজেই তাঁর স্বামীর দেনা পরিশোধ করবেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “আশ্চর্য্যের বিষয় হলো, এই চিঠিতে মিসেস শেক্সপিয়ারকে তাঁর স্বামীর হয়ে মধ্যস্থতা করতে বলা হয়নি, বরং সরাসরি ঋণ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।”

গত দুশো বছর ধরে ধারণা করা হত, অ্যান শেক্সপিয়ার তাঁর সারা জীবন স্ট্র্যাটফোর্ডেই কাটিয়েছেন এবং সম্ভবত কখনোই লন্ডনে যাননি। কিন্তু এই চিঠি প্রমাণ করে যে তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে বেশ কিছু সময় কাটিয়েছেন লন্ডনে।

চিঠিটি, যা “ট্রিটি লেনে বসবাসকারী” দম্পতির কথা উল্লেখ করে, সম্ভবত ১৪ শতকের একটি বইয়ের বাঁধাই করার সময় পাওয়া গিয়েছিল। যদিও ১৯৭৮ সালে এর সন্ধান পাওয়া যায়, কিন্তু “চিঠিটিতে উল্লেখিত নাম এবং স্থানগুলো সনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায়” বিষয়টি এতদিন অজানা ছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৬০৮ সালের একটি বই, যেখানে এই চিঠিটি পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে শেক্সপিয়ারের প্রতিবেশী এবং প্রথম মুদ্রাকর রিচার্ড ফিল্ডের (Richard Field) যোগসূত্র ছিল। স্টেগল বলেন, “শেক্সপিয়ারের সঙ্গে ফিল্ডের সুস্পষ্ট যোগসূত্র ছিল, এবং শেক্সপিয়ারের নাম উল্লেখ করা একটি কাগজের টুকরোর ফিল্ডের মুদ্রিত কাগজের পাশে পাওয়া যাওয়াটা কাকতালীয় হতে পারে না।”

চিঠিতে জন বাটস-এর শিক্ষানবিশ জীবনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। স্টেগল ১৫৮০ থেকে ১৬৫০ সালের মধ্যেকার নথি পরীক্ষা করে জন বাটস নামের এক শিক্ষানবিশকে খুঁজে পান, যিনি তাঁর বাবার মৃত্যুর পর মায়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

তিনি আরও একটি নথির সন্ধান পান, যেখানে ১৭০৭ সালে ব্রাইডওয়েল নামক একটি প্রতিষ্ঠানের নথিতে জন বাটস-এর “মায়ের প্রতি অবাধ্যতা” এবং তাঁকে “কাজের জন্য নিযুক্ত” করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পরে, স্টেগল জন বাটসকে সিটি ওয়াল-এর বাইরের এলাকা নর্টন ফোলগেটে খুঁজে পান। সেখানে তিনি পবিত্র ওয়েল স্ট্রিটে (বর্তমানে শোরডিচ হাই স্ট্রিট) বাস করতেন, যেখানে শেক্সপিয়ারের অনেক সহকর্মী এবং অভিনেতাও থাকতেন।

এই এলাকাটি ছিল শেক্সপিয়ারের কর্মজীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। তিনি প্রথমে শোরডিচের “দি থিয়েটার”-এ (The Theatre) এবং পরে “কার্টেন থিয়েটারে” (Curtain theatre) কাজ করেছেন। শেক্সপিয়ারের ব্যবসায়িক অংশীদার বারবেজ-গণও কাছাকাছি এলাকায় হোটেল ও ভোজনশালা চালাতেন।

অধ্যাপক স্টেগল বলেন, “জন বাটস-এর মতো একজন ব্যক্তি, যিনি তাঁদের (বারবেজ) কাছাকাছি থাকতেন এবং আতিথেয়তা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, বারবেজদের নজরে থাকারই কথা।”

গবেষকদের ধারণা, চিঠির পিছনের হাতে লেখা অংশটি যদি অ্যান শেক্সপিয়ারের নিজের হাতে লেখা হয়ে থাকে, তবে এটি হবে তাঁর কণ্ঠস্বর শোনবার সবচেয়ে কাছের প্রমাণ।

এই গবেষণাটি আগামী ২৩শে এপ্রিল, শেক্সপিয়ারের জন্মবার্ষিকীতে ‘শেক্সপিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT