1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 12, 2025 7:48 PM

আফ্রিকার শিকারিদের বিরুদ্ধে ওয়েলসের কুকুর, কেমন তাদের লড়াই?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Wednesday, April 23, 2025,

আফ্রিকার বন্যপ্রাণী রক্ষায় ওয়েলসের কুকুর, অবৈধ শিকার বন্ধে নতুন পদক্ষেপ।

আফ্রিকার বিভিন্ন বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণী শিকারিদের দৌরাত্ম্য কমাতে অভিনব এক কৌশল নিয়েছে ‘ডগস4ওয়াইল্ডলাইফ’ নামের একটি সংস্থা। তারা ওয়েলসের কারমারথেন শহর থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর সরবরাহ করে, যারা শিকারিদের চিহ্নিত করতে এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সাহায্য করে।

এই কুকুরগুলো মূলত বেলজিয়ান ম্যালিনো এবং ডাচ শেফার্ড জাতের হয়ে থাকে।

সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ড্যারেন প্রিডল এবং জ্যাকি ল’র মতে, বন্যপ্রাণী শিকারের ভয়াবহতা তাদের এতটাই নাড়া দেয় যে তারা এই কাজে নামেন। তারা জানান, ২০১৫ সালে একটি শিকার হওয়া গন্ডারের ছবি দেখার পরই তারা এই বিষয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রিডল বলেন, “যুক্তরাজ্যে আমরা যখন মাদক, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক খুঁজে বের করার জন্য কুকুর ব্যবহার করতে পারি, তাহলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কেন তাদের কাজে লাগানো যাবে না?”

এই পর্যন্ত, ডগস4ওয়াইল্ডলাইফ ১৫টি কুকুরকে আফ্রিকার পাঁচটি দেশে পাঠিয়েছে, যার মধ্যে মোজাম্বিক এবং তানজানিয়া অন্যতম। কুকুরগুলোকে ছোটবেলা থেকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

তারা শিকারিদের গন্ধ শুঁকে বের করতে, অবৈধভাবে পাচার হওয়া বন্যপ্রাণীর মাংস এবং অন্যান্য সামগ্রী শনাক্ত করতে বিশেষভাবে পারদর্শী।

কুকুরদের প্রশিক্ষণে ওস্তাদ ড্যারেন প্রিডলের মতে, “কুকুরদের মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য ছোটবেলা থেকেই তাদের বিভিন্ন পরিবেশে অভ্যস্ত করতে হয়।” তিনি আরও জানান প্রশিক্ষণকালে কুকুরগুলোকে সিংহ, জিরাফসহ আফ্রিকার অন্যান্য বন্যপ্রাণীর শব্দ ও গন্ধের সঙ্গে পরিচিত করানো হয়, যাতে তারা তাদের সুরক্ষায় সহায়তা করতে পারে।

এই প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর, সাধারণত ১৬ থেকে ১৮ মাস বয়সে কুকুরগুলোকে অ্যান্টি-পোচিং ইউনিটের (অবৈধ শিকার বন্ধে কাজ করা দল) হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এই কুকুরগুলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ‘শিংগা’ নামের একটি কুকুর এক শিকারির প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার পথ অনুসরণ করে তাকে ধরেছিল।

এছাড়া, ‘ড্যান’ নামের আরেকটি কুকুর দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গন্ডারের বাচ্চাকে ফাঁদ থেকে উদ্ধার করতে সাহায্য করে।

জিম্বাবুয়ের ইমিরে রাইনো অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেন্সির পার্ক ম্যানেজার রেইলি ট্র্যাভার্স জানান, কুকুরগুলো রাতেও শিকারিদের চিহ্নিত করতে সক্ষম।

তিনি আরও বলেন, “কুকুরগুলো আমাদের কর্মীদের জীবন বাঁচিয়েছে এবং অনেক শিকারিকে ধরতে সাহায্য করেছে। এর ফলে, শিকারের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।”

আফ্রিকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা ‘সেভ দ্য রাইনো’র তথ্য অনুযায়ী, একসময় জিম্বাবুয়েতে হাজার হাজার গন্ডার ছিল, কিন্তু ১৯৯২ সাল নাগাদ শিকারের কারণে এই সংখ্যা ৪৫০-এর নিচে নেমে আসে।

যদিও পরবর্তীতে এই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে, তবে এখনো অনেক গন্ডার শিকারের শিকার হচ্ছে।

ডগস4ওয়াইল্ডলাইফ-এর লক্ষ্য হলো, ভবিষ্যতে আফ্রিকাতে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা, যেখানে স্থানীয় শিশুদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে উৎসাহিত করা হবে।

‘সিয়াফুন্দা ন্‌গেমভेलो’ নামের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে, দক্ষিণ আফ্রিকার ১৮০ জনের বেশি শিশুকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। জ্যাকি ল মনে করেন, “স্থানীয় মানুষ যদি বন্যপ্রাণীদের গুরুত্ব বোঝে, তবে তারাই ভবিষ্যতের বনরক্ষক হবে।”

তথ্য সূত্র: সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT